পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কথাতেই অকস্মাৎ আজ তাহার মন যখন চমকিয়া সজাগ হইয়া উঠিল, তখন নিজের মনের বিক্ষিপ্ততা অনুভব করিয়া সে যথার্থই আশ্চর্ধ্য হইয়া গেল। তাঁহাকে নিস্তব্ধ দেখিয়া রায় মহাশয় পুনশ্চ কছিলেন, কি বল হে ? নিতুল ও সময়োপযোগী উত্তর দিবার সময় ও অবস্থা নিৰ্ম্মলের ছিল না, সে শুধু পূৰ্ব্ব কথারই পুনরুক্তি করিয়া কহিল, ভৈরবীদের দুর্নাম ত চিরদিনই আছে। রায় মহাশয় অস্বীকার করিলেন না, বলিলেন, আছে। কিন্তু দুর্নাম জিনিসটা ত মন্দ, চিরকালের দোহাই দিয়েও মন্দটাকে চিরকাল চালানো চলে না । কি বল ? কিন্তু সে যে মন্দ এ কি নিশ্চিত প্রমাণিত হয়ে গেছে ? স্বায় মহাশয় অসংশয়ে কহিলেন, গেছে । নির্গল ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া প্রশ্ন করিল, কি করে গেল ! নিশ্চয় প্রমাণ কে দিলে ? স্বায় মহাশয় বলিলেন, যে দিয়েচে সে আজও দেবে । সন্ধ্যার পরে মন্দিরে যেয়ো, তার পরে বোধ হয় শ্বশুর-জামাই দু’জনকে দু’দিকে দাড়িয়ে আর সমস্ত গ্রামের হামিতামাসা কুড়োতে হবে না। এই ত তোমার ব্যবসা, অতএব নিশ্চয়-প্রমাণ যে কাকে বলে সে আমাকে আর তোমাকে বলে দিতে হবে না। গৃহিণী পাথরের থালে মিষ্টান্ন ও বাটিতে দধি লইয়া প্রবেশ করিলেন, কহিলেন, কই বাবা, খাচ্চো না যে ? এই যে খাচ্চি, বলিয়া নিৰ্ম্মল আহারে মনোনিবেশ করিল। কৰ্ত্ত কহিলেন, নিৰ্ম্মলকে দিয়ে আমার জন্যে একটু দুধ এনে দাও, শরীরটা ভালো নেই, দুই আর খাবো না । গৃহিণী প্রস্থান করিলে রায় মহাশয় বলিলেন, অন্ধকার দুৰ্য্যোগের রাত্রে সে তোমাকে হাত ধরে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিল, তার জন্যে শুধু তুমি কেন বাবা, আমরা পৰ্য্যস্ত কৃতজ্ঞ ; যে উপকার করে, তার অপকার করষ্ঠে মন চায় না, কিন্তু এ ত আমাদের নিজেদের কথা নয় নিৰ্ম্মল, এ গ্রামের কথা, সমাজের কথা, দেব-দেবতার কথা, স্বতরাং যা বড় কৰ্ত্তব্য তা আমাকে করতেই হবে । সে রাত্রের ঘটনা যে অপ্রকাশ নাই তাহ সে শুনিয়াছিল, অথচ নিজে গোপন করিয়াছিল বলিয়া লজ্জিত-মুখে চুপ করিয়া রহিল। - কৰ্ত্ত বলিতে লাগিলেন, দেব-দেবীর ত কথা ক’ন না, কিন্তু তারা শোধ নেন । গ্রামের ভালে যে কখনে হয়নি, উত্তরেস্তুর অবনতি হয়েই আসচে, মনে হয় এও তার একটা কারণ। প্রমাণের কথা বলেছিলে, কিন্তু তুমি যে আসচো এই ব। আমরা জানলাম কি করে ? তুমি সন্তানতুল্য, তোমার কাছে সব কথা খুলে বলতে আমার বাধে, কিন্তু না বললেও নয়। জমিদারবাৰু সে-রত্রে বোধ করি খেয়ে যাবার $os