পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেনা-পাওনা কর্তা অত্যন্ত অপ্রসন্ন হইয়া কহিলেন, না--যুধিষ্টির । এই বলিয়। তিনি আসন ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাড়াইলেন। গৃহিণী জামাতাকে সম্বোধন করিয়া কইলেন, আমি ত ভধি এর কল্যাণেই নাতির মুখ আমরা দেখতে পেলাম। না বাবা, যে যাই বলুক, ঠক-জোচয় সে মেয়ে নয় । তাইতে যখন শুনতে পেলাম ঠাকুরের পূজো করাটি সে ছেড়ে দিয়েচে তখনি সন্দেহ হ’লে এ আবার কি ! নইলে কারও কথায় আমি সহজে বিশ্বাস করিনি । কর্তা চৌকাঠের বাহিরে প। বাড়াইয়াছিলেন, কান খাড় করিয়া দাড়াইয়। কহিলেন, বলি তার কল্যাণে ত নাতি পেলে, কিন্তু নাড়ির কন্যাণে মানস পূজোট তিনি কেন অস্বীকার করলেন একবার ডেকে জিজ্ঞাস করতে পারো না ? এই বলিয়া তিনি প্রত্যুস্তরের অপেক্ষ না করিয়াই চলিয়া গেলেন । নিৰ্ম্মলের খাওয়া শেষ হইয়াছিল, সেও উঠিয়া দাড়াইল, কহিল, ষোড়শীর ওপর থেকে দেখচি মায়ের ভক্তি আজও একবারে যায়নি । না বাবা, মিছে কথা কেন বলব, তার মুখখানি মনে হলেই আমার যেন কান্না পায়। এ বা সকলে মিলে কেন যে তার বিপক্ষে এত লেগেচেন মামি ভেবে পাইনে । নিৰ্ম্মল একটুখানি মৃদু হাসিয়া কৰ্ত্তার খোচার অনুসরণ করিয়া কহিল, কিন্তু ম', তার মন্ত্ৰ-তন্ত্রের বিদ্যের কথাটাও একটু ভেবে শাশুড়ী কি একটা বলিতে যাইতেছিলেন, দাসী আসিয়া দ্বারের আড়লে দাড়াইয়া কহিল, কে একজন জামাইবাবুকে ডাকতে এসেচে–ধাবু খবর দিতে বললেন । নিৰ্ম্মল হাত-মুখ ধুইয়। বাহিরে আসিয়া দেখিল ইতিমধ্যে গ্রামের অনেকেই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন, এবং সন্ধ্যার পরে মন্দিরে যে বৈঠক বসিবে তাহারই আলোচনা শুরু হইয় গেছে । শিরোমণি মহাশয়ের আজ অমাবস্তার উপবাস, তিনি নিৰ্ম্মলকে ডাকিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিলেন, এবং বাবাজীকে হঠাৎ চিনিতে পারেন নাই বলিয়া নিজের বৃদ্ধত্বের প্রতি দোষারোপ করিলেন । যে লোকটা থামের পাশে দাড়াইয়াছিল, সে নমস্কার কারয়। জানাইল যে, ভৈরবীঠাকরুণ অপেক্ষা করিয়া আছেন, তাহার সহিত বিশেষ কথা আছে । নিৰ্ম্মলের হঠাৎ অত্যন্ত লজ্জা করিয়া উঠিল। সে পিছনে না চাহিয়াও স্পষ্ট অমুভব করিল, সকলে উৎসুক কৌতুকে তাহার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করিয়া আছে । ইহার অভ্যন্তরে যে গোপন বিন্ধপ আছে, তাহা তাহাকে অপমানিত করিল, অঙ্ক সময় হয়ত সে ইহাকে অত্যন্ত সহজে অৱহেলা করিতে পারিজ, কিন্তু |3