পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেনা-পাওনা একবার ও-দিকে বার দুই-তিন মাথা নাড়িয়া হাসিমুখে বলিল, আমি কিন্তু হৈম হলে এই সমস্ত পরোপকার করা আপনার ঘুচিয়ে দিতাম। অত ভালমানুষ নই—আমার কাছে ফাকি চলত ন-রীত্রি-দিন চোখে চোখে রাখতাম । ইঙ্গিত এত মুম্পষ্ট যে নির্ণলের বুকের মধ্যেটা বিশ্বয়ে, ভয়ে ও আনন্দে একই সঙ্গে ও একই কালে তরঙ্গিত হইয়া উঠিল । এবং সেই অসংবৃত অবসরে মুখ দিয়া তাহার বাহির হইয়া গেল, চোখে চোখে রাখলেই কি রাখা যায় ষোড়শী । এর বাধন যেখানে শুরু হয়, চোখের দৃষ্টি যে সেখানে পৌঁছায় না, এ-কথা কি আজও জানতে তুমি পারোনি ? পেরেচি বই কি, বলিয়া যোড়শী হাসিল । বাহিরে হঠাৎ একটা শব। শুনিয়া গল! বাড়াইয়া দেখিয়া কহিল, এই যে ইনি এসেচেন । কে ? ফকিরসাহেব ? না, জমিদারবাবু। বলে পাঠিয়েছিলাম সভা ভাঙলে যাবার পথে আমার কুঁড়েতে একবার একটু পদধূলি দিতে। তাই দিতেই বোধ হয় আসচেন । সঙ্গে লোকজন বিস্তর, স্ত্রীলোকের ঘরে একাকী আসতে বোধ করি সাধুপুরুষের ভরসায় কুলোয়নি । পাছে দুর্নাম হয় । এই পলিয়া সে হাসিতে লাগিল । ব্যাপারটা নিৰ্ম্মলের একেবারে ভাল লাগিল না। সে বিরক্ত ৫ সঙ্কোচে আড়ষ্ট হইয়া বলিল, এ-কথা আমাকে আপনি বলেননি কেন ? বেশ ! একবার তুমি একবার আপনি ? বলিয়। সে হাসিয়া কহিল, ভয় নেই, উনি ভারি ভদ্রলোক, লড়াই করেন না। তা ছাড়া, আপনাদের ত পরিচয় নেই—সেটাও একটা লাভ । বলিয়া সে দ্বারের বাহিরে অগ্রসর হইয়া অভ্যর্থনা কলিয়া কঙ্গিল, আমুন—আমার কুঁড়ে আর একবার পবিত্ৰ হ’লে । জীবানন্দ চৌকাঠে পা দিয়া থমকিয়া দাড়: ক্ষণকান্স নিরীক্ষণ করিয়া কহিল, ইনি ? নিৰ্ম্মলবাবু বোধ হয় ? ষোড়শী হাসিমুখে জবাব দিল, হুঁ, আপনার পদ্ধ বলে পরিচয় দিলে খুব সম্ভব অতিশয়োক্তি হবে না। »ፀኝ»