পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেনা-পাওনা ষোড়শী উত্তর দিল না। নিৰ্ম্মল নিজেও একটু স্থির থাকিয়া বলিল, আমি আপনাকে বাঁচাতে এসেছিলাম, বাঁচাতেও হয়ত পারতাম, তবু কেন যে হতে দিলেন না তা জামি বুঝেটি বিষয় রক্ষা হতো, কিন্তু কুৎসার ঢেউ তাতে তেমনি উত্তাল হয়ে উঠত, এবং সে থামাবার সাধ্য আমার ছিল না। বলিয়া সে যে কাহাকে কটাক্ষ করিল তাহ উপস্থিত সকলেই বুঝিল । কিন্তু জীবানন্দ নীরব হইয়া বহিল, এবং ষোড়শী নিজেও ইহার কোন প্রতিবাদ করিল না । নিৰ্ম্মল জিজ্ঞাসা করিল, এখন তা হলে কি করবেন স্থির করেচেন ? ষোড়শী বলিল, সে আপনাকে আমি পরে জানাবো। কোথায় থাকবেন ? এ সংবাদও আপনাকে আমি পরে দেবো । বাহির হইতে সাড়া আসিল, মা ! ষোড়শী গলা বাড়াইয়া দেখিয়া কহিল, ভূতনাথ ? আয় বাবা, ঘরে নিয়ে আয়। মন্দিরের তৃত্য আজ একটা বড় ঝুড়ি ভরিয়া দেবীর প্রসাদ, নানাবিধ ফলমূল ও মিষ্টান্ন আনিয়াছিল। ষোড়শ হাতে লইয়া জীবনন্দের মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া স্নিগ্ধ হাসিমুখে কহিল, সেদিন আপনাকে পেটভরে খেতে দিতে পারিনি, কিন্তু আজ সে ক্রাট সংশোধন করে তবে ছাড়ব । নিৰ্ম্মলের প্রতি চাহিয়া বলিল, আর আপনি ত ভগিনীপতি, কুটুম্ব—আপনাকে শুধু শুধু যেতে দিলে ত অন্যায় হবে। অনেক তিক্ত-কটু আলোচনা হয়ে গেছে, এখন বহন দিকি দু’জনে খেতে। মিষ্টিমুখ না করিয়ে ছেড়ে দিলে আমার ক্ষোভের সীমা থাকবে না । 8 - নিৰ্ম্মল কহিল, দিন । কিন্তু জীবানন্দ অস্বীকার করিয়া বলিল, আমি খেতে পারব না । পারবেন না ? কিন্তু পারতেই যে হবে। জীবানন্দ তথাপি মাথা নাড়িয়া বলিল, না । ষোড়শী হাসিয়া কহিল, মিথ্যে মাথা নাড়া চৌধুরীমশায়। যে স্থযোগ জীবনে আর কখনো পাবো না, তা যদি হাতে পেয়ে ছেড়ে দিই ত মিছেই এতকাল ভৈরবীগিরি করে এলাম। বলিয়া সে জল-হাতে উভয়েরই সন্মুখের স্থানটা মূছিয়া লইয়া শালপাতা পাতিয়া মিষ্টান্ন পরিবেশন করিয়া খাওয়াইতে বসিল । মিষ্টান্ন যে আজ যথার্থই জীবানন্দের গলায় বাধিতেছিল, ইহা লক্ষ্য করিতে ষোড়শীয় বিলম্ব হইল না। সে গলা খাটো করিয়া কহিল, তবে থাক, এগুলো আর আপনার খেয়ে কাজ নেই, আপনি শুধু ছটাে ফল খান। বলিয়া নিজেই হাত বাড়াইয়া তাহার পাতায় একধারে উচ্ছিষ্ট খাবারগুলা সরাইয়া দিয়া বলিল, কি হ’লে জাজ ? সত্যিই ক্ষিঙ্গে নেই ন-কি ? না থাকে ত জোর করে খাবার দরকায় १६१ Y