পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ নেই। দেহের মধ্যে যে অস্থখের স্বষ্টি করে রেখেচেন, সে মনে হলেও আমার ভয় হয় । নিৰ্ম্মল একমনে খাইতেছিল, সে মুখ তুলিয়া চাহিল। এই কণ্ঠস্বরের অনিৰ্ব্বচনীয়ত খটু করিয়া তাহার কানে বাজিয়া অকারণে বহুদূরবর্তী হৈমকে তাহার স্মরণ করাইয়া দিল । ছ'জনের অনেক হাস্ত-পরিহাসের বিনিময় হইয়া গেছে, আজ সকালেও এই ষোড়শীর কথায় ও ইঙ্গিতে সৰ্ব্বশরীরে তাহার পুলকের বিদ্যুৎ শিহরিয়া গেছে কিন্তু এ গলা ত সে নয়! মাধুর্য্যের এরূপ নিবিড় রসধারা ত তাহাতে ঝরে নাই! মিষ্টারের মিষ্ট তাহার মুখে বিস্বাদ এবং ফলের রস তিতা লাগিয়া আহারের সমস্ত আনন্দ যেন মুহূর্তে তিরোহিত হইয় গেল। খানিক পর লক্ষা করিয়া ষোড়শী সবিস্ময়ে কহিল, আপনারও যে ওই দশা হলো নিৰ্ম্মলবাবু, খেলেন কই ? নিৰ্ম্মল বলিল, যা খেতে পারি তা আপনার বলবার আগেই খেয়েচি, অনুরোধের অপেক্ষা করিনি । -খাবারগুলো আজ বুঝি তা হলে ভাল দেয়নি? তা হবে । অন্যদিন কেমন দেয় সে ত জানি নে। বলিয়া সে হাত ধুইবার উপক্রম করিল। এ-বিষয়ে তাহার কৌতুহলের একান্ত অভাব শুধু ষোড়শীর নয়, জীবানন্দেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করিল ; কিন্তু এ লইয়া কেহ আর আলোচনা তুলিল না। বাহিরে আসিয়া ষোড়শী মুখ-হাত ধুইবার জল দিয়া এবং সাজা পান হাতে দিয়া তাহা ঠিক আছে কিনা দেখিয়া লইতে অনুরোধ করিল, কিন্তু নিজের বা তাহার সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন করিল না । $ নিৰ্ম্মল কহিল, আমি এখন তা হলে যাই— আপনি বাড়ি ফিরবেন কবে ? আমার আর ত কোন প্রয়োজন নেই, হয়ত কালই ফিরতে পারি। ছেলেকে, হৈমকে আমার আশীৰ্ব্বাদ দেবেন। নিৰ্ম্মল একমুহূৰ্ত্ত চুপ করিয়া থাকিয়া কহিল, আমাকে আর বোধ হয় কোন আকণ্ঠক নেই ? ষোড়শী নিজেও ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া কহিল, এতবড় অহঙ্কারের কথা কি আমি বলতে পারি নির্মলবাবু? তবে মন্দির নিয়ে আর বোধ হয় আমার কখনো আপনাকে দুঃখ দেবার আবগুক হবে না। নিৰ্ম্মল মান-মুখে হালির প্রয়াস করিয়া কহিল, আমাদের শীঘ্র ভুলে যাবেন না আশা করি ? ষোড়শী মাথা নাড়িয়া শুধু কহিল, না। নিৰ্ম্মল নমস্কার করিয়া কহিল, আমি চললাম। যদি সকালের গাড়িতে যাওয়৷ >){Notr v .