পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিণীত৷ বললুম। শেখরদা বললে, কে কে খেলে ? আমি বললুম, তুমি আর সই-ম, চাকদিদি আর তার মামা। আচ্ছা, তুমি ভাল খেলো, না চারুদিদির মামা ভাল খেলে সেজদি । সই-মা বলে তুমি ভালো খেলো, না ? ললিত সে-কথার জবাব না দিয়া হঠাৎ অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া বলিল, তুই অত কথা বলতে গেলি কেন ? সব কথায় তোর কথা কওয়া চাই, আর কোনদিন তোকে আমি কিছু দেব না, বলিয়া রাগ করিয়া চলিয়া গেল। কালী অবাক হইয়া গেল। তাহার এই আকস্মিক ভাবপরিবর্তনের হেতু সে কিছুই বুঝিল না। মনোরমার তাল-খেলা দু’দিন বন্ধ হইয়াছে—ললিত আসে না । তাহাকে দেখিয়া অবধি গিরীন যে আকৃষ্ট হইয়াছিল, তাহা প্রথম হইতেই মনোরম সন্দেহ করিয়াছিলেন তাহার সেই সন্দেহ আজ স্বাঢ় হইল। এই দুইদিন গিরীন কি একরকম উৎসুক ও অন্যমনস্ক হইয়াছিল। অপরাষ্ট্রে বেড়াইতে যাইত না, যখন তখন বাড়ির ভিতরে আসিয়া এঘর-ওঘর করিত, আজি দুপুরবেলা আসিয়া বলিল, দিদি, আজও খেলা হবে না ? মনোরম বলিলেন, কি করে হবে গিরীন, লোক কৈ ? না হয়, আয় আমরা তিনজনেই খেলি । গিরীন নিরুৎসাহভরে বলিল, তিনজনে কি খেলা হয় দিদি ? ও বাড়ির ললিতাকে একবার ডাকতে পাঠাও না । সে আসবে না । - গিরীন বিমর্ষ হইয়া কহিল, কেন আসবে না, ওদের বাড়িতে মানা ক'রে দিয়েচে, বোধ হয়, না ? মনোরম ঘড়ি নাড়িয়া বলিলেন, ন, ওর মামা মামী সে-রকম মানুষ নয়—সে নিজেই আসে না । গিরীন হঠাৎ খুশী হইয়া বলিল, তা হলে তুমি নিজে আঙ্গ একবার গেলেই আসবে,–কথাটা বলিয়া ফেলিয়া সে নিজের মনেই ভারি অপ্রতিভ হইয়া গেল । মনোরমা হাসিয়া ফেলিলেন,–আচ্ছা, তাই যাই, বলিয়া চলিয় গেলেন এবং খানিক পরে ললিতাকে ধরিয়া আনিয়া তাস পড়িয়া বসিলেন । দু'দিন খেলা হয় নাই, আজ অল্প সময়ের মধ্যেই বেশ জমিয় গেল। ললিতার জিতিতেছিল। ঘন্ট-দুই পরে সহসা কালী আসিয়া দাড়াইয়া বলিল, সেজদি, শেখরদা ডাকচেন —জলদি ! - షిరీ