পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেনা-পাওঁনা করিতেই জীবানন্দ তেমনি সহাস্তে কহিল, বেশ ত টাকা না হয় নাই দেবে ষোড়শী । তা ছাড়া আরও অনেক রকমের সুবিধে— কিন্তু প্রস্তাব শেষ হইতে পাইল না । ইহার মুখে নিজের নাম শুনিয়াই ষোড়শী অকস্মাৎ প্রবল বেগে মাথা নাড়িয়া বলিয়া উঠিল, আপনার টাকা, আপনার সুবিধা, আপনার থাক্‌, আমাকে যেতে দিন । বলিয়াই সে যথার্থই এবার এক পা অগ্রসর হইয়া গেল । কিন্তু যে লোকগুলোকে এই লোকটাও তাহার সঙ্গে দিতে সাহস করে না, তাহাদিগকেই সম্মুখে কিছু দূরে বসিয়া থাকিতে দেখিয়া সে আপনিই থমকিয়া দাড়াইল । তাহার বাক্য ও কাৰ্য্যের কোন প্রতিবাদ জমিদার করিল না, কিন্তু তাহার মুখ অন্ধকার হইয়া উঠিল । এক মুহূৰ্ত্ত চুপ করিয়া থাকিয়া কহিল, তুমি মদ খাও? ষোড়শী কহিল, না । জীবানন্দ জিজ্ঞাসা করিল, তোমার জন-দুই অন্তরঙ্গ পুরুষ বন্ধু আছে শুনেছি । সত্যি ? ষোড়শী তেমনি মাথা নাড়িয়া বলিল, মিছে কথা । জীবানন্দ আবার ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া প্রশ্ন করিল, তোমার পূৰ্ব্বেকার সকল ভৈরবীই মদ খেতেন—সত্যি ? ষোড়শী কহিল, সত্যি ! জীবানন্দ কহিল, মাতঙ্গী ভৈরবীর চরিত্র ভাল ছিল না—এখনো তার সাক্ষী আছে । সত্যি না মিছে ? ষোড়শী লজ্জিত মৃদুকণ্ঠে কহিল, সত্যি বলেই গুনেছি । জীবানন্দ কহিল, শুনেচ ? ভাল। তবে হঠাৎ তুমিই বা এমন দলছাড়া গোত্রছাড়া ভাল হতে গেলে কেন ? প্রত্যুত্তরে ষোড়শী এই কথা বলিতে গেল যে ভাল হইবার অধিকার সকলেরই আছে ; কিন্তু সহসা একটা অত্যন্ত পুরুষ কণ্ঠস্বর তাহাকে মাঝখানেই থামাইয়া দিল । জমিদার জীবানন্দ সোজা হুইয়া উঠিয়া বসিয়া কহিল, মেয়েমানুষের সঙ্গে তর্ক আমি করি নে, তাদের মতামতও কখনও জানতে চাই নে । তুমি ভাল কি মন্দ, চুল-চিরে তার বিচার করবারও আমার সময় নেই। আমি বলি চণ্ডীগড়ের সাবেক ভৈরবীদের যেভাবে কেটেচে, তোমারও তেমনিভাবে কেটে গেলেই যথেষ্ট। আজ তুমি এই বাড়িতেই থাকবে । হুকুম শুনিয়া ষোড়শী বজ্রাহতের ন্যায় একেবারে কাঠ হইয়া গেল। জীবালন্স কহিতে লাগিল, তোমার সম্বন্ধে কি ক’রে যে এতটা সহ করেচি জানি নে, আর 。岱建