পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দর্পচূৰ্ণ সকলের কাছে আমার মাথা ক্টেট করে দেবীর কি দরকার ছিল ? সেদিন বাড়িতে যেন একটা হাসি পড়ে গেল । নরেন্দ্র স্নান মুখ আরও স্নান করিয়া অফুটে কহিল, আর যোগাড় করতে পারলুম না | না পাঠিয়ে তাই কেন লিখে দিলে না? উঃ–আবার সেই নিত্য নেই নেই—দাও দাও— বেশ ছিলুম এতদিন । বাস্তবিক বড়লোকের মেয়ে গরীবের ঘরে পড়ার মত মহাপাপ আর সংসারে নেই, বলিয়৷ এই পরম সত্যে স্বামীর হৃদয় পূর্ণ করিয়া ইন্দু অন্যত্র চলিয়া গেল । মাসাধিক পরে স্বামী-স্ত্রীর এই প্রথম সাক্ষাৎ । বাহিরে আসিয়া ইন্দু ইতস্ততঃ দৃষ্টি-নিক্ষেপ করিয়া, নিজের শোবার ঘরে ঢুকিয়া ভারি আশ্চৰ্য্য হইয়া দেখিল, বাড়ির অন্যান্য স্থানের মত এখানেও সমস্ত বস্তু রীতিমত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হইতেছে। জিজ্ঞাসা করিল, এত ঝাড়া-মোছা হচ্ছে কেন রে ? নূতন ঝি বলিল, আপনি আসবেন বলে। আমি আসব বলে ? ই, মা, বাবু তাই ত বলে দিলেন। আপনি ময়লা কিছু দেখতে পারেন না— আজ তিন দিন থেকে তাই— ইন্দু অস্তরের মধ্যে একটা বড় রকমের গৰ্ব্ব অতুভব করিল। কিন্তু সহজভাবে বলিল, ময়লা কে দেখতে পারে ? তবু ভাল যে— ই মা, লোক লাগিয়ে ওপর নীচে সমস্ত সাফ করা হয়েচে । বি, রামটহলটাকে একবার ডেকে দাও ত, বাজার থেকে কিছু ফল-মূল কিনে আমুক । ফলটল ত সব আছে মা । বাবু আজ সকালে নিজে বাজারে গিয়ে সমস্ত খুঁটিয়ে কিনে এনেচেন । ডাব আছে ? আঙুর। আছে বৈ-কি। এখনি নিয়ে আসচি, দাসী চলিয়া গেল। ইন্দুর মুখের উপর হইতে বিরক্তির মেঘখানা সম্পূর্ণ উড়িয়া গেল। বরং অনতিপূৰ্ব্বে স্বামীর মলিন মুখখানা বুকের কোথায় যেন একটু খচ, খচ, করিতে লাগিল। বিশ্রাম করিয়া ঘণ্টা-দুই পরে সে প্রসন্নমুখে বসিবার ঘরে ঢুকিয়া দেখিল, নরেন্দ্র চশমা খুলিয়া ঝুকিয়া বসিয়া কি লিখিতেছে। কহিল, অত মন দিয়ে কি লেখা হচ্ছে কবিতা ? নরেন্দ্র মুখ তুলিয়া বলিল, না। কি তবে ? ראa