পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম পরিচ্ছেদ লরেন্দ্রবাবুর পত্র যুবার অভিমান কোন বালককে দেখিয়াছ কি ? সত্যেন্দ্রর স্কায় অভিমান করিয়া এতটা অনৰ্থপাত করিতে কোন বালককে দেখিয়াছ কি ? ছেলেবেলায় পুস্তক লইয়া খেলা করিতাম বলিয়া পিতার নিকট শান্তি ভোগ করিয়াছি। সত্যেন্দ্রনাথ ! তুমি হৃদয় লইয়া খেলা করিয়াছ ; শাস্তি পাইবে ভয় হয় কি ? তোমরা খুব ; সমস্ত সংসারটাই তোমাদের স্বথের নিকেতন ; কিন্তু বল দেখি, তোমাদের কাহারও কি এমন একটা সময় আসে নাই—যখন প্রাণটা বাস্তবিকই ভার বোধ হইয়াছে ? যখন জীবনের প্রত্যেক গ্রন্থিগুলি শ্লথ হইয়া ক্লাস্তভাবে ঢলিয়া পড়িবার উপ ক্ষম করিয়াছে ? না হইয়া থাকে একবার সত্যেন্দ্রনাথকে দেখ। ঘৃণা করিতে ইচ্ছা হয় স্বচ্ছন্দে ঘৃণা কর । ঘুণী কর, সহানুভূতি প্রকাশ করিও না । ঘৃণা কর, কিছু বলিবে না ; দয়া করিও না, মরিয়া যাইবে । পাপী যদি মরিয়া যায়, প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করিবে কে ? সত্যেন্দ্র শ্রাস্ত জীবনের প্রত্যেক দিন এক-একটা দুঃসহ বোঝা লইয়া আসে । সমস্তদিন ছটফট করিয়াও যেন সে বোঝা অার নামাইতে পারে না । সত্যেন্দ্রর মাঝে মাঝে বোধ হয় যেন সে তাহার অতীত জীবন সমস্ত বিশ্বত হইয়া গিয়াছে ; শুধু কিছুতেই ভুলিতে পারে না তাহার সাধের নলিনী পাবনায় চরিত্রহীনা হইয়াছিল, তাই সে তাহার স্বামী-কর্তৃক পরিত্যক্ত হইয়াছে। প্রায় দুইমাস গত হইল, সত্যেন্দ্রনাথের বিবাহ হইয়াছে ; আজ একখানা পত্র ও একটি ছোট পার্শেল আসিয়া সত্যেন্দ্রর নিকট পৌঁছিল। পত্রটি নলিনীর দাদা নরেন্দ্রবাবুর, সেখানি এই— সত্যেন্দ্রবাবু, আতি অনিচ্ছা-সত্ত্বেও যে আপনাকে পত্র লিখিতেছি, সে কেবল আমার প্রাণাধিক ভগিনী নলিনীর জন্য। মৃত্যুর পূৰ্ব্বে সে অনেক করিয়া বলিয়া গিয়াছে, যেন এই অঙ্গুরীয়টি আপনার নিকট পুনঃপ্রেরিত হয়। আপনার নামাঙ্কিত অঙ্গুরীয়টি পাঠাইলাম। ভগিনীর ইচ্ছা ছিল এইটি আপনার নূতন স্ত্রীকে পরাইয়া দেন, ভরসা করি তাহার আশা পুরবে। আর মৃত্যুর পূৰ্ব্বে সে আপনাকে বিশেষ করিয়া অমুনয় করিয়া গিয়াছে, যেন তাহার ছোট ভগিনীটি ক্লেশ না পায় । ॐब८ब्रट्झूनांशं