পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ੇਿਕ਼੧ “—” সে আজ অনেকদিনের কথা। প্রায় দশ-বারো বৎসরের কথা । তখন দুর্গাদাসবাবু উকিল হন নাই। দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুমি বোধ হয় ভাল চেনে না, আমি বেশ চিনি। এসো, তাহাকে আজ পরিচিত করিয়া দিই ! ছেলেবেলায় কোথা হইতে এক অনাথ পিতৃণাতৃহীন কায়স্থ বালক রামদাসবাবুর বাটতে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিল। সকলেই বলিত, ছেলেটি বড় ভালো । বেশ সুন্দর -বুদ্ধিমান চাকর, দুর্গাদাসবাবুর পিতার বড় স্নেহের ভূত্য । সব কাজ-কৰ্ম্মই সে নিজে টানিয়া লয় । গরুর জাব দেওয়া হইতে বাবুকে তেল মাখানো পর্য্যস্ত সমস্তই সে নিজে করিতে চাহে । সৰ্ব্বদা ব্যস্ত থাকিতে বড় ভালবাসে । ছেলেটির নাম হরিচরণ । গৃহিণী প্রায়ই হরিচরণের কাজ-কৰ্ম্মে বিস্মিত হইতেন ! মধ্যে মধ্যে তিরস্কারও করিতেন, বলিতেন, হরি —অন্য চাকর আছে ; তুই ছেলেমানুষ, এত খাটিস কেন ? হরির দোষের মধ্যে ছিল সে বড় হাসিতে ভালবাসিত । হাসিয়া উত্তর করিত, মা, আমরা গরীব লোক, চিরকাল খাটতেই হবে, আর বসে থেকেই বা কি হবে ? এইরূপ কাজ-কৰ্ম্মে, সুখে, স্নেহের ক্রোড়ে হরিচরণের প্রায় এক বৎসরকাল কাটিয়া গেল । স্বরে রামদাসবাবুর ছোট মেয়ে। স্বরোর বয়স এখন প্রায় পাঁচ-ছয় বৎসর। হরিচরণের সহিত স্বরোর বড় আত্মীয়ভাব দেখা ঘাইত ! যখন দুগ্ধ-পানের নিমিত্ত গৃহিণীর সহিত স্বরে দ্বন্দ্বযুদ্ধ করিত, যখন মা অনেক অযথা বচস করিয়াও এই ক্ষুদ্র কন্যাটিকে স্বমতে আনিতে পারিতেন না এবং দুগ্ধ-পানের বিশেষ আবশ্বকতাও তাহার অভাবে কন্যারত্বের আশু প্রাণবিয়োগের আশঙ্কায় শঙ্কান্বিত হইয়া বিষম ক্রোধে মুরোবালার গণ্ডদ্বয় বিশেয টিপিয়া ধরিয়াও তাহাকে দুধ খাওয়াইতে পারিতেন না, তখনও হরিচরণের কথায় অনেক ফল লাভ হইত। যাক, অনেক বাজে কথা বকিয়া ফেলিলাম। আসল কথাটা এখন বলি, শোনো । না হয় স্বরে হরিচরণকে ভালবাসিত। ●óፃ 红一8°