পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/৩৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ রমেন বললে, আমার এক কাকা ছিলেন, তার দু'পাটি দাতই বাধানে । খুড়ো দামী টুথ-পেস্ট ঘষতেন, বিশ্বাস ছিল ওতে দাতের গোড়া শক্ত হয়। তোমার জলধিরও বুদ্ধি দেখি তেমনি। ও জানে পাহারা জিনিসটা দরকারী, অতএব তোমাকে ঘিরে কসে পাহারা লাগিয়েছে । শুনি ও-ই না কি তোমার আধা-মনিব । তাই মনিবআনার দুরমুশ ভুকে ঠুকে পরীক্ষা করে নিতে চায় মণিমালার নৈতিকতার বনেদে কোথাও মাটি আলগা আছে কি না। ওকে খামোক বজবজের গল্প করতে গেলে কেন ? সত্যি কথা বলায় দোষটা হ’লো কি ? হায় রে কপাল | সত্যি বোঝার শক্তি থাকলে বজবজের ব্যাপার শুনে ও হাসতো, বেড়ালের মতে মুখ ফোলাতে না । ভাবি, তোমাকে ভালবাসতে গেছে ও কোন বুদ্ধিতে ? ইডিয়ট । মণি হেসে ফেললে। বললে, তোমার বুদ্ধিই বা এমন কি ধারালো ! তোমার বিষ্ঠের বিস্তৃতি দেখে অবাক হই । শুনতে শুনতে ছ’স থাকে না, গঙ্গার ঘাটে বারোটা বেজে যায়,–কিন্তু বুদ্ধির বেলায় সব পুরুষই সমান । তবু জলধিবাবুর প্রশংসা করি, আমাকে সে যা-ই ভাবুক, অনস্ত রূপসী ভাবে না। কিন্তু তুমি আরও বেহায়, আরও বড় ইডিয়ট । - ওগো আমি যে কালী-ভক্ত। বলিনে তুমি রূপসী, বলি তুমি ভীমা, ভয়ঙ্করী, —তোমার মুখের ই৷ কুমীরের মতে, গায়ের রং অমাবস্ত-রাত্রির চেয়ে গাঢ়তর, তুমি আশ্চৰ্য্য ! দেবতারা বোঝেন না তা নয়, কিন্তু, ভক্তের মুখে বাড়িয়ে শুনতে ভালবাসেন । যদি আমি বাঙালী না হয়ে হিন্দুস্থানী হতাম, উপাস্য দেবতা হতেন হনুমানজী, তাহলে তারও পোড়ামুখে তেল-সিঁদুরের ঘন প্রলেপ লাগিয়ে হাতজোড় করে বলতাম, হে জবাকুসুমসঙ্কাশ, তুমি তীক্ষুদ্ৰংষ্ট, বজ্রনখ, তোমার গায়ের রেশয়ায় ইন্দ্ৰধনুর দু্যতি, তোমার ল্যাজ গিয়ে ঠেকেছে আকাশে, তোমার মত বীর দ্বিতীয় নেই, তুমি প্রসন্ন হয়ে আমার প্রতি কৃপা-দৃষ্টি কর। হনুমানজীর অজ্ঞাত থাকতো না, ভক্ত খোশামোদ করছে, কিন্তু বর দিয়েও ফেলতেন। অভিষ্ট লাভ হ’তো । মণি হেসে বললে, হুম্মানজী তোমার গলায় ল্যাজ জড়িয়ে সাত সমুদূর পারে রেখে আসতেন,—যেখান থেকে এসেছ সেইখানে । আহ, সে-ই কি কম লাভ মণি ! ফিরে যাবার ভাড়া লাগতো না, এরোপ্লেনের ū92