পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ দেবার সত্যিকার মালিক যে তুমি, আমি নয়, এ-কথা সে জানে। এই বলে ধর খেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ দোরের কাছে থমকে দাড়িয়ে বললে, তবু সেই বাহুল্য কথাটাই বলার জন্যে একবার তার বাসায় যেতে হবে । আমার সম্বন্ধে মণি আর যাই মনে করুক, এ না মনে করে এক অভাগা আর এক অভাগার অন্ন মেরে দিলে । এই বলেই কুতবেগে চলে গেল । চতুর্থ পরিচ্ছেদ ওদিকে মণিমালার ঘর থেকে এইমাত্র গুটিচারেক মেয়ে নেবে গেল। তারা মণির বন্ধু। এসেছিল নারী-সমিতির পক্ষ থেকে। আগামী সপ্তাহে বসবে অধিবেশন, ডেলিগেট আসছেন নানা জেলা থেকে প্রায় শতাধিক, প্রস্তাব এই যে, উক্ত সভায় মণিমালাকে মুভ করতে হবে একটা omnibus resolution—তাতে বাবাহ-বিচ্ছেদ “থেকে চাকরিতে নরনারীর সমান মাইনে পৰ্য্যন্ত নামা দাধিই বেশ কড়া করে থাকবে । মণি কিন্তু রাজি হ’লো না, হেসে বললে, যে চেহারা ভাই আমার—কেউ বিয়ে করলেই বেঁচে যাই, তা আবার বিবাহ-বিচ্ছেদ এনা হেনা দুই বোন, তাদের ঋণঝই সবচেয়ে প্রখর ; রেগে বললে, বিয়ে কি আমাদেরই হয়েছে নাকি ? আমরা নিজেদের কথা ত ভাবছিনে, ভাবছি সমস্ত নারী-জাতির হয়ে । তুমি বলতে পারে। চমৎকার, ডিবেট করতে তোমার জোড়া নেই, তাই স্থকল্যাণী মিটারের ইচ্ছে এ resolution তোমাকে দিয়েই প্রস্তাবিত করা। আমরা ফিরে আসছি তার চিঠি নিয়ে, দেখি কি করে অস্বীকার করে । - মণি বললে, আমাকে মাপ করো ভাই । এনা বললে, জানো এতে তাকে অপমান করা হবে ? অপমান ত করছিনে ভাই, আমি হাত-জোড়.করছি। আচ্ছ সে দেখা যাবে। আসছি চিঠি নিয়ে। হয়ত বা তিনি নিজেই এসে হাজির হবেন। এই বলে মেয়েরা চলে গেল। তাদের কাপড়ের এসেন্সের গন্ধে তখনও ঘরের বাতাস ভারী, উত্তেজিত কণ্ঠের ঝাঝালো তর্ক তখনও চারটে দেওয়ালের গায়ে মাথা ঠুকে বেড়াচ্ছে। মণি ডাকলে, রমেন কি ঘুমুচ্ছে ? ঘরের অপর প্রাস্তে একটি কেম্বিসের ইজিচেয়ারে রমেন চোখ বুজে শুয়েছিল, সাড়া দিয়ে বললে, না আমার ট্রেনের শব্দেই ঘুম হয় মা, এ ত চার চারটে ফুরোপ্লেনের সার্কাস চলছিল । " . - - ४७३