পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রহ . কেমন। কত বড়, কত বয়স, কেমন দেখিতে, কত গুণ, কিছুই সে জানিত না, জানিবার বালন হয় নাই, একবার মনেও পড়ে নাই। ইহার সম্বন্ধে একটি কথা জিজ্ঞাসা করিতেও ত লোকের সাধ হয় ! সবাই কহে, বড়দিদি, সেও কহে, বড়দিদি। সবাই তাহার নিকট স্নেহ-যত্ব পায়, সেও পায়। বিশ্বের ভাণ্ডার তাহার নিকট গচ্ছিত আছে, যে চাহে a ap–বন্ধেও লইয়াছে, ইহাতে আশ্চর্য্যের কথা আর কি ? মেঘের কাজsল বরণ করা, বড়দিদির কাজ—স্নেহ-যত্ন করা। যখন বৃষ্টি পড়ে, তখন যে হাত পাতে, সে-ই জল পায়। বড়দিদির নিকট হাত পাতিলে অভীষ্ট-পদার্থ পাওয়া নয়। মেঘের মণ্ডই বুঝি সে অন্ধ, কামনা এবং আকাজাহীন। মোটের উপর সে এমনি একটি ধারণা করিয়া রাখিয়াছিল। আসিয়া অবধি সে যে ধারণা গড়িয়া রাখিয়াছিল—আজও তাঁহাই আছে। শুধু এই কাশীগমন ঘটনাটির পর হইতে এইটুকু সে বেশী জানিয়াছে যে, বড়দিদি ভিন্ন তাহার এক দণ্ডও চলিতে পারে না । সে যখন বাড়িতে ছিল, তখন তাহার পিতাকে জানিত, বিমাতাকে জানিত । তাহাদের কর্তব্য কি তাহা বুঝিত, কিন্তু বড়দিদি বলিয়া কাহারও সহিত পরিচিত হয় নাই—যখন পরিচয় হইয়াছে, তখন সে এমনই বুঝিয়াছে। কিন্তু মানুষটিকে সে চিনে না, জানে না, শুধু নামটি জানে, নামটি চেনে, লোকটি তাহার কেহ নহে। নামটি সৰ্ব্বস্ব । লোক যেমন ইষ্ট দেবতাকে দেখিতে পায় না, শুধু নামটি শিখিয়া রাখে, দুঃখে-কষ্টে সেই নামটির সমূপে সমস্ত হৃদয় মুক্ত করে, নতজাহ হইয়া করুণাভিক্ষ চাহে, চক্ষে জল আসে, মুছিয়া ফেলিয়৷ শূন্তদৃষ্টতে কাহাকে যেন দেখিতে চাহে–কিছুই দেখা যায় না ; অস্পষ্ট জিরা শুধু ছুইটি কথা অফুট উচ্চারণ করিয়া থামিয়া যায় । দুঃখ পাইয়া তাই স্বরেন্দ্রনাথও অস্ফুট উচ্চারণ করিল, বড়দিদি । \ পঞ্চম পরিচ্ছেদ তখনও স্বৰ্য্যোদয় হয় নাই, পূৰ্ব্বদিক রঞ্জিত হইয়াছে মাত্র। প্রমীলা আসিয়া নিদ্রিত জেনাথের গলা জড়াইয়া ধরিল-মাস্টারমশায়। স্বরেন্দ্রনাথের অলপ চক্ষু ছট ঈষৎ উন্মুক্ত হইল—কি প্রমীলা? 岛 বড়দিদি এসেছেন। স্বরেন্দ্রনাথ উঠিয়া বসিল। প্রমীলার হাত ধরিয়া বলিল, চল, দেখে আসি । X8w