পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दफुिि এই দেখিবার বাসনাটি তাহার মনে কেমন করিয়া উদয় হইল বলা যায় না, এবং এতদিন পরে কেন যে সে প্রমীলার হাত ধরিয়া চক্ষু মুছিতে মুছিতে ভিতরে চলিল, তাহাও বুঝিতে পারা গেল না ; কিন্তু সে ভিতরে আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহার পর সিড়ি বাহিয়া উপরে উঠিল। মাধবীর কক্ষের সম্মুখে দাড়াইয়া প্রমীলা ডাকিল, বড়দিদি। বড়দিদি অন্যমনস্ক হইয়া কি একটা কাজ করিতেছিল, কহিল, কি দিদি ! মাস্টারমশাই— দুইজনে ততক্ষণে ভিতরে প্রবেশ করিয়াছে। মাধবী শশব্যস্তে দাড়াইয়া উঠিল ; মাথার উপর এক হাত কাপড় টানিয়া একপাশে সরিয়া দাড়াইল। স্বরেন্দ্রনাথ কহিতেছিল; বড়দিদি, তোমার জন্য আমি বড় কষ্ট্রে—মধধী অবগুণ্ঠনের অন্তরালে বিষম লজ্জায় জিভ কাটিয়া মনে মনে বলিল, ছি-ছি ! তুমি চলে গেলে— মাধৰী মনে মনে বলিল, কি লজ্জা ! মাধবী মুদ্র-কণ্ঠে কহিল, প্রমীলা, মাস্টারমশায়কে বাহিরে যাইতে বল । প্রমীলা ছোট হইলেও তাহার দিদির আচরণ দেখিয়া বুঝিতেছিল যে কাজটা ঠিক হয় নাই। বলিল, চলুন মাস্টারমশায়— অপ্রতিভের মত কিছুক্ষণ সে দাড়াইয়া রহিল, তাহার পর বলিল, চল । বেশি কথা সে কহিতে জানিত না, বেশি কথা বলিতে সে চায় নাই, তবে সারাদিন মেঘের পর স্থৰ্য্য উঠিলে, হঠাৎ যেমন লোকে সেদিকে চাহিতে চায়, ক্ষণকালের জন্ত যেমন মনে থাকে না যে স্বর্য্যের পানে চাহিতে নাই, কিংবা চাহিলে চক্ষু পীড়িত হয়, তেমনি একমাস মেঘাচ্ছন্ন আকাশের তলে থাকিয়া প্রথম স্থৰ্য্যোদয়ের সহিত স্বপেন্দ্রনাথ পরম আহলাদে চাহিয়া দেখিতে গিয়াছিল, কিন্তু ফল যে এরূপ দাড়াইবে, তাহা সে জানিত না । সেইদিন হইতে তাহার যত্নটা একটু কমিয়া আসিল। মাধবী যেন একটু লজ্জা করিত। বিন্দু দাসী নাকি কথাটা লইয়া একটু হাসিয়াছিল। স্বরেন্দ্রনাথও একটু সঙ্কুচিত হইয়া পড়িয়াছিল। আজকাল সে যেন দেখিতে পায়, তাহার বড়দিদির অসীম ভাণ্ডার সসীম হইয়াছে। ভগিনীর ষত্ব, জননীর স্নেহ-পরশ, যেন তাহার আর গায়ে লাগে না, একটু দূরে দূরে থাকিয়া সরিয়া যায়। একদিন সে প্রমীলাকে কহিল, বড়দিদি আমার উপর রাগ করেছেন, না ? প্রমীলা বলিল, হঁ। কেন রে ? эвъ