পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চন্দ্রনাথ প্রথম পরিচ্ছেদ চন্দ্রনাথের পিতৃশ্ৰান্ধের ঠিক পূৰ্ব্বের দিন কি একটা কথা লইয়া তাহার খুড়া মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের সহিত তাহার মতান্তর হইয়া গেল। তাহার ফল এই হইল যে, পরদিন মণিশঙ্কর উপস্থিত থাকিয়া তাহার অগ্রজের পারলৌকিক সমস্ত কাজের তত্ত্বাবধান করিলেন, কিন্তু একবিন্দু আহাৰ্য্য স্পর্শ করিলেন না, কিংবা নিজের বাটীর কাহাকেও স্পর্শ করিতে দিলেন না। ব্রাহ্মণ-ভোজনাস্তে চন্দ্রনাথ করজোড়ে কহিল, কাক, দোষ করি, অপরাধ করি, আপনি আমার পিতৃতুল্য, আমি আপনার ছেলের মতো–এবার মার্জন করুন । পিতৃতুল্য মণিশঙ্কর উত্তরে বলিলেন, বাবা,তোমরা কলকতায় থেকে বি.এ., এম.এপাশ করে বিধান হয়েছ, আমরা কিন্তু সেকালের মুখ, আমাদের সঙ্গে তোমাদের মিশ খাবে না। এই দেখ না কেন, শাস্ত্রকারেরাই বলেচেন, যেমন, গোড়া কেটে আগায় জল ঢালা । শাস্ত্রোক্ত বচনটির সহিত আধুনিক পণ্ডিত ও সেকেলে মুখের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ মা থাকিলেও মণিশঙ্কর যে নিজের মনের ভাবটা প্রকাশ করিয়াছিলেন, চন্দ্রনাথ তাহ। বুঝিয়া মনে মনে প্রতিজ্ঞা করিল, খুড়ার সহিত আর সে কোন সম্বন্ধ রাখিবে না । আর, পিতার জীবদ্দশাতেও এই দুই সহোদরের মধ্যে হৃদ্যতা ছিল না। কিন্তু আহারব্যবহারটা ছিল। এখন সেইটা বন্ধ হইল। চন্দ্রনাথের পিতা যথেষ্ট ধন-সম্পত্তি রাখিয়া গিয়াছেন, কিন্তু বাটতে আত্মীয়-স্বজন কেহ নাই, শুধু এক অপুত্ৰক মাতুল এবং দ্বিতীয় পক্ষের মাতুলানী। সমস্ত বাড়িটা যখন বড় ফাক ঠেকিল, চন্দ্রনাথ তখন বাটীর গোমস্তাকে ভাকিয় কহিল, সরকারমশায়, আমি কিছু দিনের জন্য বিদেশ যাব, আপনি বিষয়-সম্পত্তি যেমন দেখছিলেন, তেমনি দেখবেন । আমার ফিরে আসতে বোধ হয় বিলম্ব হবে । মাতুল ব্রজকিশোর তাঁহাতে আপত্তি প্রকাশ করিয়া কহিলেন, এখন তোমার কোথাও গিয়ে কাজ নেই ; তোমার মন খারাপ হয়ে আছে, এ সময় বাটতে থাকাই উচিত । - চন্দ্রনাথ তাহা শুনিল না। বিষয়-সম্পত্তির সমুদয় ভার সরকার মহাশয়ের \vడి