পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চজমাথ, করিতে হইবে । রোগ হইলে ডাকিতে আসে—শুশ্রুষা করিতে হইবে। আর সতরঞ্চ খেলিতে আসে। কই, এত বয়স হ'ল, কেহ ত কখনো পরামর্শ করিতে আসে নাই ! কিন্তু অনেক রাত্রি পর্য্যস্ত ভাবিয়াও তিনি স্থির করিতে পারিলেন না, কেন এই স্বৰ্য্যের আলোর মত পরিষ্কার এবং স্ফটিকের মত স্বচ্ছ জিনিসটা লোক-গ্রাহ হয় না, কেন এই সহজ প্রাঞ্জল ভাষাটা সংসারের লোক বুঝিয়া উঠিতে পারে না । সেই রাত্রেই হরিদয়াল অনেক চিন্তার পর মন স্থির করিয়া চন্দ্রনাথের খুড়া মণিশঙ্করকে পত্র লিখিয়া দিলেন যে, চন্দ্রনাথ স্বেচ্ছায় এক বেণ্ডা-কন্যা বিবাহ করিয়া ঘরে লইয়া গিয়াছেন। অষ্টম পরিচ্ছেদ হরিদরাল সমস্ত কথা পরিষ্কার করিয়া মণিশঙ্করকে লিখিয়া দিয়াছিলেন । , সেই জন্যই তাহার সহজেই বিশ্বাস হইল, সংবাদটা অসত্য নহে। কিন্তু বুঝিতে পারিলেন না, এস্থলে কৰ্ত্তব্য কি ? এ সংবাদটা তাহার পক্ষে মুখেরই হৌকৃ বা দুঃখেরই হৌক, গুরুতর তাহাতে সন্দেহ নাই। এত ভার তাহার এক বহিতে ক্লেশ বোধ হইল, তাই স্ত্রীকে নিরিবিলিতে পাইয়া মোটামুটি খবরটা জানাইয়া বলিলেন, আমার পরামর্শ নিলে কি এমন হ’ত ? না এত বড় জুয়াচুরি ঘটতে দিতাম ? যাই হৌক, কথাটা এখন প্রকাশ কোরো না, ভাল ক'রে ভেবে দেখা উচিত। কিন্তু ভাল করিয়া ভাবিতে সময় লাগে, দুই-চারি দিন অপেক্ষ করিতে হয়, স্ত্রীলোক এতটা পারে না, তাই হরিদয়ালের পত্রের মৰ্ম্মার্থ দুই-চারি কান করিয়া ক্রমশঃ সংখ্যায় বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। মেয়ে দেখার দিন হরিবাল শুনিতে পাইয়াছিলেন, তাই ভয়ে ভয়ে সেদিন জানিতে আসিয়াছিলেন, চন্দ্রনাথ সরষুকে কতখানি ভালবাসে । সেদিন মেয়ে-মহলে অক্ষুট-কলকণ্ঠে এ প্রশ্নটা খুব উৎসাহের সহিত আলোচিত হইয়াছিল, কেননা তাহারাই প্রথমে বুঝিয়াছিল যে, শুধু ভালবাসার গভীরতার উপরেই সরযুর ভবিষ্যৎ নিহিত আছে। সকলেই চাপা গলায় কথা কহে, সকলের মুখে-চোখে প্রকাশ পায় যে, একটা পৈশাচিক আনন্দ-প্রবাহ এই কোমল বক্ষগুলির মধ্যে ছুটিয়া ফিরিতেছে। দুঃখপ্রকাশ এবং দীর্ঘশ্বাস ত আছেই, কিন্তু সকলের ষেন গোপন ইচ্ছা সরযূর \e:N