পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত আমি বলিলাম, না। কিন্তু তোমার সঙ্গে চ’লে গিয়েছিলাম তা সবাই জানে । ইন্দ্র আর কোন প্রশ্ন করিল না । আমি ভাবিয়াছিলাম, এইবার সে উঠবে, কিন্তু, তাহাও করিল না—চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। তাহার মুখে সৰ্ব্বদাই কেমন একটা হাসির ভাব থাকে, এখন তাহাও নাই, এবং কি-একটা সে যেন আমাকে বলিতে চায়, অথচ তাহাও পারিতেছে না, বলিয়া উঠিতেও পারিতেছে ন—বসিয়া থাকিতেও যেন অস্বস্তি বোধ করিতেছে । আপনাৱা পাঁচজন এখানে হয়ত বলিয়া বসিবেন, এটি বাপু তোমার কিন্তু মিছে কথা । অতখানি মনস্তত্ত্ব আবিষ্কার করিবার বয়সটা তো তা নয় । আমিও তাহ স্বীকার করি। কিন্তু আপনারাও এ কথাটা ভুলিতেছেন যে, আমি ইন্দ্রকে ভালবাসিয়াছিলাম। একজন আর একজনের মন বুঝে সহানুভূতি এবং ভালবাসা দিয়া—বয়স এবং বুদ্ধি দিয়া নয়। সংসারে যে যত ভালবাসিয়াছে, পরের হৃদয়ের ভাষা তাহার কাছে তত ব্যক্ত হইয়া উঠিয়াছে । এই অত্যস্ত কঠিন অস্তদৃষ্টি শুধু ভালবাসার জোরেই পাওয়া যায়, আর কিছুতে নয় । তাহার প্রমাণ দিতেছি । ইন্দ্র মুখ তুলিয়া কি যেন বলিতে গেল, কিন্তু বলিতে না পারিয়া সমস্ত মুখ তার অকারণে রাঙা হইয়া উঠিল । তাড়াতাড়ি একটা শরের ডাটা ছিড়িয়া নতমুখে জলের উপর নাড়িতে নাড়িতে কহিল, ঐকান্ত ! - কি ভাই ? তোর—তোর কাছে টাকা আছে ? ক’ টাকা ? ক’ টাকা ? এই—ধৰ্ব, পাচ টাকা— আছে। তুমি নেবে ? বলিয়া আমি ভারি খুশী হইয়া তাহার মুখপানে চাছিলাম। এ কয়টি টাকাই আমার ছিল। ইন্দ্রর কাজে লাগিবার অপেক্ষ তাহার সদ্ব্যবহার আমি কল্পনা করিতেও পারিতাম না। কিন্তু ইন্দ্র ত কৈ খুশী হুইল না। মুখ যেন তাহার অধিকতর লজ্জায় কি একরকম হইয়া গেল । কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া কহিল, কিন্তু আমি ত এখন তোকে ফিরিয়ে দিতে পারব না | আমি আর চাইনে, বলিয়া সগৰ্ব্বে তাহার মুখের পানে চাহিলাম। জাবার কিছুক্ষণ সে মুখ নীচু করিয়া থাকিয়া ধীরে ধীরে কছিল, আমি নিজে চাইনে। একজনদের দিতে হবে, তাই। তারা বড় দুঃখী রে-খেতেও পায় না। তুই ষাবি সেখানে ? চক্ষের নিমেষে আমার সে রাত্রির কৰা মনে পড়িল । లిఖి