পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ গুনি, এ দুঃসাহসের কাজ নাকি তিনি আমার জন্তই করিয়াছিলেন । কিন্তু সে মিছে কথা। তবুও একদিন গভীর রাত্রে, খিড়কির দ্বার খুলিয়। আমার স্বামীর জন্তই গৃহত্যাগ করিয়াছিলাম। কিন্তু সবাই শুনিল, সবাই জানিল, অন্নদা কুলত্যাগ করিয়া গিয়াছে । এ কলঙ্কের বোঝা আমাকে চিরদিনই বহিয়া বেড়াইতে হইবে । কোন উপায় না । কারণ স্বামী জীবিত থাকিতে আত্মপ্রকাশ করিতে পারি নাই— পিতাকে চিনিতাম ; তিনি কোন মতেই তার সন্তানঘাতীকে ক্ষমা করিতেন না । কিন্তু আজ যদিও আর সে ভয় নাই—আজ গিয়া তাকে বলিতে পারি, কিন্তু এ গল্প এতদিন পরে কে বিশ্বাস করিবে ? মৃতরাং পিতৃগৃহে আমার আর স্থান নাই। তা ছাড়া আমি আবার মুসলমানী । এখানে স্বামীর ঋণ যাহা ছিল, পরিশোধ করিয়াছি। আমার কাছে লুকানো দুটি সোনার মাকৃড়ি ছিল, তাহাই বেচিয়াছি। তুমি যে পাঁচটি টাকা একদিন রাখিয়া গিয়াছিলে, তাহা খরচ করি নাই। আমাদের বড় রাস্তার মোড়ের উপর যে মুর্দীর দোকান আছে, তাহার কৰ্ত্তার কাছে রাখিয়া দিয়াছি—চাহিলেই পাইবে । মনে দুঃখ করিয়ো ন৷ ভাই। টাকা কয়টি ফিরাইয়। দিলাম বটে, কিন্তু তোমার ওই কচি বুকটুকু আমি বুকে পুরিয়া লইয়া গেলাম। আর এইটি তোমার দিদির আদেশ শ্ৰীকান্ত, আমার কথা ভাবিয়া তোমরা মন খারাপ করিও না। মনে করিও, তোমার দিদি, যেখানেই থাকুক, ভালই থাকিবে ; কেননা দুঃখ সহিয়া সহিয়া এখন কোন দুঃখই আর গায়ে লাগে না । তাকে কিছুতেই আর ব্যথা দিতে পারে না। আমার ভাই দুটি, তোমাদের আমি কি বলিয়া ষে আশীৰ্ব্বাদ করিব খুজিয়া পাই না । তবে শুধু এই বলিয়া যাই—ভগবান পতিব্রতার যদি মুখ রাখেন, তোমাদের বন্ধুত্বটি যেন চিরদিন তিনি অক্ষয় করেন । তোমাদের দিদি অন্নদা • আজ একাকী গিয়া মূীর কাছে দাড়াইলাম। পরিচয় পাইয়া যুদী একটি ছোট দ্যাকড়া বাহির করিয়া গেরো খুলিয়া দুটি সোনার মাকড়ি এবং পাঁচটি টাকা বাহির করিল। টাকা কয়টি আমার হাতে দিয়া কহিল, বহু মাকড়ি দুইটি আমাকে একুশ টাকায় বিক্ৰী করিয়া শাহ জীর সমস্ত ঋণ পরিশোধ করিয়া চলিয়া গিয়াছেন। কিন্তু কোথায় গিয়াছেন, তাহা জানি না। এই বলিয়া সে কাহার ৰত ঋণ, মুখে মুখে একটা হিসাব দিয়া কহিল, যাবার সময় বছর হাতে সাড়ে &\}