পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ আসন সীতা, সাবিত্রী, সতীর সঙ্গেই ; তাকে তার বাপ, মা, আত্মীয়-স্বজন, শত্ৰু-মিত্র জানিয়া রাখিল কি বলিয়া ? কুলটা বলিয়া, বেহা বলিয়া ? ইহাতে তোমারই বা কি লাভ ? সংসারই বা পাইল কি ? . হায় রে, কোথায় তাহার এইসব আত্মীয়-স্বজন, শত্ৰু-মিত্র,—এ যদি একবার জানিতে পারিতাম। সে দেশ যেখানে যত দূরেই হউক, এ দেশের বাহিরে হইলেও হয়ত একদিন গিয়া হাজির হইয়া বলিয়া আসিতাম—এই তোমাদের অন্নদা । এই তার অক্ষয় কাহিনী ! তোমাদের যে মেয়েটিকে কুলত্যাগিনী বলিয়া জানিয়া রাথিয়াছ, সকালবেলায় একবার তার নামটাই লইও—অনেক দুষ্কৃতির হাত হইতে এড়াইতে পারিৰে । তবে আমি একটা সত্য বস্তু লাভ করিয়াছি। পূৰ্ব্বেও একবার বলিয়াছি, নারীর কলঙ্ক আমি সহজে প্রত্যয় করিতে পারি না। আমার দিদিকে মনে পড়ে। যদি তার ভাগ্যেও এতবড় দুর্নাম ঘটিতে পারে, তখন সংসারে পারে না কি ? এক আমি, আর সেই সমস্ত কালের সমস্ত পাপ-পুণ্যের সাক্ষী তিনি ছাড়া, জগতে আর কেহ কি আছে, যে অন্নদাকে একটুখানি মেহের সঙ্গেও স্মরণ করিবে ! তাই ভাবি, না জানিয়া নারীর কলঙ্কে অবিশ্বাস করিয়া সংসারে বরং ঠকাও ভাল, কিন্তু বিশ্বাস করিয়া পাপের ভাগী হওয়ায় লাভ নাই । তার পরে অনেক দিন ইন্দ্রকে আর দেখি নাই । গঙ্গার তীরে বেড়াইতে গেলেই দেখি, তাহার ডিঙ্গি কুলে বাধা । জলে ভিজিতেছে, রৌদ্রে ফাটিতেছে। শুধু আর একটি নিমাত্র আমরা উভয়ে সেই নৌকায় চড়িয়াছিলাম। সেই শেয। তার পরে সেও আর চড়ে নাই, আমিও না। এই নিটা আমার খুব মনে পড়ে। শুধু আমাদের নৌকা-যাত্রার সমাপ্তি বলিয়াই নয়। সেদিন অধও স্বার্থপরতার যে উংকট দৃষ্টান্ত দেখিতে পাইয়াছিলাম, তাহ সহজে ভুলিতে পারি নাই। সেই কথাটাই বলিব । সেদিন কমৃকনে শীতের সন্ধ্যা। আগের দিন খুব এক পশলা বৃষ্টিপাত হওয়ায়, শীতটা যেন ছুচের মত গায়ে বিধিতেছিল। আকাশে পূর্ণচন্দ্র। চারিদিক জ্যোংস্নায় যেন ভাসিয়া যাইতেছে । হঠাৎ ইন্দ্ৰ আসিয়া হাজির ৷ কহিল, -তে থিয়েটার হবে, যাবি ? থিয়েটারের নামে একেবারেই লাফাইয়া উঠিলাম। ইন্দ্র কহিল, তবে কাপড় পরে শীগগির আমাদের বাড়ি আয়। পাচ মিনিটের মধ্যে একখানা র্যাপার টানিয়া লইয়া ছুটিরা বাহির হইলাম। সেখানে যাইতে হইলে ট্রেনে যাইতে হয়। ভাৰিলাম, উহাদের বাড়ির গাড়ি করিয়া স্টেশনে যাইতে হইবে-তাই তাড়াতাড়ি । &ự