পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস কথাটা বন্দন বুঝিল না, কিন্তু বিপ্রদাসের উক্তি অসত্য বলিয়া মনে করাও কঠিন, বলিল, দ্বিজুবাৰু একদিন বলেছিলেন দাদার মনের কথা কেউ জানতে পারে না, যেটা শুধু বাইরের তাই কেবল লোকে টের পায় ; কিন্তু যা অস্তরের তা অস্তরেই চাপা থাকে, মুখুয্যেমশাই-এ কি সত্যি ? উত্তরে বিপ্রদাস শুধু একটু হাসিল, তারপরে বলিল, বন্দনা, তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। যদি সত্যিই থাকতে সেখানে ইচ্ছা না হয় থেকে না—চলে এসে । চলেই আসবো মুখুয্যেমশাই, থাকতে সেখানে পারবো না। এই বলিয়া বন্দন আর বিলম্ব না করিয়া নীচে নামিয়া গেল । পরদিন সকালে দেখা হইলে বিপ্রদাস জিজ্ঞাসা করিল, বোনের বিয়ে নির্বিঘ্নে সমাধা হলো ? ই হ’লো—বিঘ্ন কিছু ঘটেনি। নিজের জিদই বজায় রইলো, মাসীর অনুরোধ রাখলে না ? কত রাতে ফিরলে ? রাত্রি তখন তিনটে । মাসীর কথা রাখা চলল না, রাত্রেই ফিরতে হ’লো। একটুখানি থামিয়া বোধ হয় বন্দন ভাবিয়া লইল বলা উচিত কি-না, তার পরেই সে বলিতে লাগিল, মাত্র কয়েক ঘণ্টা ছিলুম কিন্তু কাজ করে এসেচি অনেক। এক বছরে যা করতে পারিনি মিনিট পাচ-ছধুেই তা হয়ে গেল। মুধীরের সঙ্গে শেষ করে এলুম। - বিপ্রদাস আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, বলে কি ! ই্যা তাই। কিন্তু ওকে অকুলে ভাসিয়ে দিয়ে আসিনি। আজ সকালে যে মেয়েটিকে দেখেছিলেন তার নাম হেম । হেমনলিনী রায় । ওর জিন্মাতেই স্বধীরকে দিয়ে এলুম। আবার আমার সেই বোম্বায়ের কলের কথাই মনে পড়ে, তার মতো ওদের ওখানেও ভালবাসার টানা-পোড়েন দেখতে দেখতে মানুষের ভবিষ্ণুং গড়ে ওঠে। আবার ভাঙেও তেমনি । বিপ্রদাস তেমনি বিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করিল-ব্যাপারটা হ’লো কি ? স্বধীরের সঙ্গে হঠাৎ শেষ করে আসার মানে ? বন্দনা কহিল, শেষ করার মানে শেষ করা । কিন্তু তাই বলে ওখানে হঠাৎ বলেও কিছু নেই। ওদের তাল অসম্ভব দ্রুত বলেই বাইরে থেকে হঠাৎ বলে ভ্রম হয়, কিন্তু আসলে তা নয়। স্বধীর আমাকে ডেকে বললে, আমার অত্যন্ত অন্যায় হয়েচে । বললুম, কি অন্যায় হয়েচে সুধীর ? সে বললে, কাউকে না বলে—অর্থাৎ তাকে না জানিয়ে-অকস্মাৎ এ-বাড়িতে চলে আসা আমার খুব গর্হিত কাজ হয়েচে । 勒翰