পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরং-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বলিয়া সে চলিয়া গেল। মিনিট-পাচেক পরে সে যখন ফিরিয়া আসিল তাহার হাতে রূপোর বাটতে বার্লি-বরফের ভিতর রাখিয়া ঠাণ্ড করা—নেবুর রস নিঙড়াইয়া দিয়া কহিল, এর সবটুকু খেতে হবে, ফেলে রাখলে চলবে না । সেবার ক্রটি দেখিয়ে কেউ ষে আমার কৈফিয়ৎ চাইবে সে অামি হতে দেবে না । বিপ্রদাস বলিল, জুলুমের বিদ্যেটি ষোল আনায় শিক্ষা করে নিয়েচ, কারো কাছে ঠকতে হবে না দেখচি । বন্দন বলিল, না। কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবো, মুখুয্যেমশায়ের ওপর হাত পাকিয়ে পাকা হয়ে গেছি । খাওয়া শেষ হইলে উচ্ছিষ্ট পাত্রটা হাতে করিয়া বন্দন চলিয়া যাইতেছিল, ফিরিয়া দাড়াইয় জিজ্ঞাসা করিল, আমার একটি কথার জবাব দেবেন মুখুয্যেমশাই ? কি কথা বন্দন ? ংসারে সকলের চেয়ে আপনাকে কে বেশি ভালবাসে বলতে পারেন ? পারি । বলুন ত কি নাম তার ? তার নাম বন্দন দেবী । শুনিয়া বন্দন চক্ষের পলকে বাহির হইয়া গেল। কিন্তু মিনিট পনেরো পরেই আবার ফিরিয়া আসিয়ু বিছানার কাছে একটা চৌকি টানিয়া বসিল । বিপ্রদাস হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, অমন করে ছুটে পালিয়ে গেলে কেন বলো ত ? বন্দন প্রথমে জবাব দিতে পারিল না । তারপরে ধীরে ধীরে বলিল, কথাটা হঠাৎ কেমন সইতে পারলুম না মুখুয্যেমশাই। মনে হ’ল যেন আমার কি-একটা বিত্র চুরি আপনার কাছে ধরা পড়ে গেছে । তাই এখনো মুখ তুলে চাইতে পারচো না ? তা কেন পারবে না, বলিয়া জোর করিয়া মুখ তুলিয়া বন্দন হাসিতে গেল, কিন্তু সলজ সরমে সমস্ত মুখখানি তাহার রাঙা হইয়া উঠিল, পরে আত্মসংবরণ করিতে করিতে বলিল, কি করে আপনি এ কথা জানলেন বলুন ত ? বিপ্রাস কহিল, এ প্রশ্ন একেবারে বাহুল্য বন্দনা। এতই কি পাষাণ আমি যে এটুকুও বুঝতে পারিনি ? তা ছাড়া সন্দেহ যদিও কখনো থাকে, আজ তোমার পানে চেয়ে আর তা আমার নেই। বন্দন! আবার মুখ নীচু করিল। বিপ্রদাস বলিল, কিন্তু তাই বলে ও চলবে না বন্দন, মুখ তুলে তোমাকে চাইতে ጏ መቄ