পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস কিন্তু কেন ? মা তোকে বিশ্বাস করতে পারেন, তোকে ভাল ভাবতে পারেন, এ কি তুই সত্যিই চাসনে ? এ অভিমানে লাভ কি বলতো ? লাভ কি জানিনে, কিন্তু লোভ বিশেষ নেই । আমি আপনার পেয়েচি স্নেহ, পেয়েচি বউদিদির ভালবাসা, এই আমার সাত রাজার ধন, সাতজন্ম দু'হাতে বিলিয়েও শেষ করতে পারবে না, কিন্তু বলিয়া ফেলিয়াই তাহার চোখ-মুখ লজ্জায় রাঙা হইয়া উঠিল। হৃদয়ের এই সকল আবেগ-উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করিতে সে চিরদিন পরাম্মুখ-চিরদিন নিস্পৃহতার আবরণে ঢাকা দিয়া বেড়ানোই তাহার প্রকৃতি,—মুহূৰ্ত্তে নিজেকে সামলাইয়া ফেলিয়া বলিল, কিন্তু এ-সব আলোচনা নিম্প্রয়োজন। যেটা প্রয়োজন সে হচ্ছে এই যে, আমার চোথে বন্দনার চলে যাওয়ার ভাবটা দেখালো যেন রাগের মতো । এর মানেট বলে দিন । মানেট বোধ হয় এই যে, তুই যখন এসে পড়েছিস তখন ওর আর দরকার নেই। এখন থেকে সেবা-শুশ্রষার ভার তোর উপর। এই বলিয়া বিপ্রদাস হাসিতে লাগিল । দ্বিজদাস বলিল, আপনি ঠাট্টা করছেন বটে, কিন্তু আমি বলচি, এইসব ইংরাজিনবিশ মেয়েগুলো এই দস্ততেই একদিন মরবে। আপনাকে রোগে সেবা করার দিন যেন-না কখনও আসে, কিন্তু এলে প্রমাণ হতে দেরি হবে না যে দাদার সেবায় দ্বিজুকে হারানো দশটা বন্দনার সাধ্যে কুলোবে না, এ কথা তাকে জানিয়ে দেবেন । স্নেহ-হাস্তে বিপ্রদাসের মুখ প্রদীপ্ত হইয়া উঠিল, কহিল, আচ্ছা জানাবো, কিন্তু বিশ্বাস করবে কিনা জানিনে। তবে সে পরীক্ষার প্রয়োজন দাদার কাছে নেই,— আছে শুধু একজনের কাছে, সে মা । বোঝা-পড়া তোদের একটা হওয়া দরকারবুঝলি রে দ্বিজু ? দ্বিজদাস বলিল, ন দাদা বুঝলাম না। কিন্তু মা যখন, তখন বেঁচে থাকলে বোঝা-পড়া একদিন হবেই, কিন্তু এখুনি প্রয়োজনটা কিসের এলে এইটেই ভেবে পাচ্ছিনে । এই বলিয়া ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া কহিল, আমার কপালে সবই উণ্টে । বাবা জন্ম দিলেন, কিন্তু দিয়ে গেলেন না কানাকড়ির সম্পত্তি – সে দিলেন আপনি । মা গর্ভে ধারণ করলেন, কিন্তু পালন করলেন অন্নদাদিদি, অণর সমস্ত ভার বয়ে মানুষ করে তুললেন বৌদিদি,-দুজনেই পরের ঘর থেকে এসে। পিতা স্বৰ্গ: পিতা ধৰ্ম্মঃ এবং মাতা স্বর্গাদপি গরীয়সী—এই শ্লোক আউড়ে মনকে আর কত চাঙ্গা রাখবো দাদা, আপনিই বলুন ? বিপ্রদাস কহিল, মায়ের মামলা নিয়ে আর ওকালতি করবো না, সে তুই আপনিই একদিন বুঝবি, কিন্তু বাবার সম্বন্ধে যে ধারণা তোর আছে সে ভুল। অৰ্দ্ধেক বিষয়ের সত্যিই তুই মালিক। చీ هلأسس فيه