পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস আমি জানতুম বন্দনা। তোমার কি মনে নেই আমি সতর্ক করে একদিন তোমাকে বলেছিলুম, এ-সব তোমার জন্যে নয়, এ-সব করতে তুমি যেয়ে না। সেই মূঢ়তা ঘুচেছে জেনে আমি খুনীই হলুম। মনে করেছিলে শুনে বুঝি বড় কষ্ট পাবো, কিন্তু তা নয়। যার যা স্বাভাবিক নয় তা না করলে আমি দুঃখ বোধ করিনে । তোমার ত মনে আছে আমি কিসের ধ্যান করি তুমি জানতে চাইলে আমি চুপ করেছিলুম। বলতে বাধা ছিল বলে নয়, অকারণ বলে। কিন্তু এসব কথাবার্তা এখন থাকৃ। তোমার বোম্বায় ফিরে যাবার কি কোন দিন স্থির হলো ? অভিমানে বন্দনার মুখ আরক্ত হইয়া উঠিল, বিপ্রদাসের প্রশ্নের উত্তরে শুধু বলিল, না । সেদিন তোমার মাসীর ভাইপো অশোকের কথা বলেছিলে । বলেছিলে ছেলেটিকে তোমার ভালই লেগেচে। এ কয়দিনে তার সম্বন্ধে আর কিছু কি জানতে পারলে ? না ! তোমাদের বিয়েই যদি হয় আশীৰ্ব্বাদ করবো, কিন্তু মাসীর তাড়ায় যেন কিছু করে বোসে না । তার তাগাদাকে একটু সামলে চোলো । বদনার চোখে জল আসিয়া পড়িল, কিন্তু মুখ নীচু করিয়া সামলাইয়া বলিল, আচ্ছা । বিপ্রদাস বলিল, আমি পরশু বাড়ি যাব। দু'তিন দিনের বেশি থাকতে পারবে না। ফিরে আসার পরেও যদি কলকাতায় থাকো একবার এসে । বদন মুখ নীচু কবিয়াই ছিল, মাথা নাড়িয়া কি একটা জবাব দিল তাহার न्छठे अर्थ বুঝা গেল না । বিপ্রদাস কহিল, শুনলে ত আমার ছুটি মঞ্জু হ’লো, এখন থেকে সব ভার দ্বিজুর। সংসারের ঘানিতে বাবা আমাকে ছেলেবেলাতেই জুড়ে দিয়েছিলেন, কখনো অবকাশ পাইনি কোথাও যাবার। আজ মনে হচ্ছে যেন নিশ্বাস ফেলে বঁাচবো । এবার বন্দন মুখ তুলিয়া জিজ্ঞাসা করিল, সত্যিই কি নিশ্বাস ফেলার এতই দরকার হয়েছে মুখুয্যেমশাই ? সত্যিই কি আজ আপনি এত প্রান্ত । বিপ্রদাস এ প্রশ্নের উত্তরটা এড়াইয়া গেল, বলিল, ভালো কথা বদন, আমার অমুখে তোমার সেবার উল্লেখ করে দ্বিজুকে বলেছিলুম, তোমার কাছে তাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। এর অৰ্দ্ধেক তারা কেউ পারতো না । দ্বিজু কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেও তোমাকে বলতে বলেচে, যদি সে সময় কখনো আসে দাদার সেবায় তার সমকক্ষ হওয়া দশটা বনানারও সাধ্যে কুলোবে না। } >>