পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বিপ্রদাসকে দেখিয়া মা চমকিয় গেলেন-এ কি দেং হয়েচে বাবা, একেবারে যে আধখানা হয়ে গেচি। বিপ্রদাস পায়ের ধূলা লইয়া বলিল, আর ভয় নেই মা, এবার সেরে উঠতে দেরি হবে না । কিন্তু কলকাতায় ফিরে যেতেও আর দেবো না তা যত কাজই তোর থাকৃ। এখন থেকে নিজের চোখে-.চাখে রাখবো । বিপ্রদাস হাসিমুথে চুপ করিয়া রহিল। বন্দনা তাহাকে প্রণাম করিলে দয়াময়ী আশীৰ্ব্বাদ করিয়া বলিলেন, এসো মা, এসো- বেঁচে থাকো । কিন্তু কণ্ঠস্বরে তাহার উৎসাহ ছিল না, বুঝা গেল এ শুধু সাধারণ শিষ্টাচার, তার বেশি নয়। তাহাকে আসার নিমন্ত্রণ করা হয় নাই, সে স্বেচ্ছায় আসিয়াছে মা এইটুকুই জানিলেন । তিনি মৈত্রেয়ীর কথা পাড়িলেন । মেয়েটির গুণের সীমা নাই, দয়াময়ীর দুঃখ এই যে এক-মুখে তাহার ফর্দ বুচিয়া দাখিল করা সম্ভব নয়। বললেন, বাপ শেখাননি এমন বিষয়ু নেই, জানে না এমন কাজ নেই। বৌমার শরীরটা তেমন ভালো যাচ্চে না—তাই ও একাই সমস্ত ভার যেন মাথায় তুলে নিয়েচে । ভাগ্যে ওকে আন হয়েছিল বিপিন, নইলে কী যে হোতে আমার ভাবলে ভয় করে । বিপ্রদাস বিস্ময় প্রকাশ করিয়া কহিল, বলে কি মা ! দয়াময়ী কহিলেন, সত্যি বাবা । মেয়েটার কাজ-কৰ্ম্ম দেখে মনে হয় কর্তৃ যে বোঝা আমার ঘাড়ে ফেলে রেখে চলে গেছেন তার আর ভাবনা নেই । বেীমা ওকে সঙ্গী পেয়ে সকল ভার স্বচ্ছন্দে বইতে পারবেন, কোথাও ক্রট ঘটবে না। এ-বছর ত আর হলে না, কিন্তু বেঁ.চ যদি থাকি আসচে বারে নিশ্চিন্ত-মনে কৈলাস দর্শনে আমি যাবোই যাবো । বিপ্রদাস নীরব হইয়া রহিল । দয়াময়ীর কথা ত মিথ্যা নয়, মৈত্রেী হয়ত এমনি প্রশংসার যোগ্য, কিন্তু যশোগানের ও মাত্রা আছে, স্থান কাল আছে । তাহার লক্ষ্য যাই হোক, উপলক্ষটাও কিন্তু চাপা হিল না। একটা অকরুণ অসহিষ্ণু ক্ষুদ্রতা তাহার স্বপরিচিত মৰ্য্যাদায়ু গিয়া যেন রুঢ় আঘাত করিল । হঠাৎ ছেলের মুখের পানে চাহিয়া দয়ামী নিজের এই ভুলটাই বুঝিতে পারলেন, কিন্তু তখনি কি করিয়া যে প্রতিকার কৱিবেন তাহাও খুজিয়া পাইলেন না । দ্বিজদাস কাজের ভীড়ে অন্যত্র আবদ্ধ ছিল, খবর পাইয়া আসিয়া পৌছিল । বিপ্রাস কহিল, কি ভীষণ কাণ্ড করেচি দ্বিজু, সামলাবি কি করে ? দ্বিজদাস বলিল, ভার ত আপনি নিজে নেননি দাদা, দিয়েচেন আমার ওপর । আপনার ভয়টা কিদের } 〉abr