পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস দীপালোকে দেখা গেল এইবার অশ্রুজলে দ্বচক্ষু তাহার টল টল করিতেছে, ঘাড় ফিরাইয়া কোনমতে মুছিয়া আবার সে সোজা হইয়া বসিল। বনানা গাঢ়স্বরে কহিল, বিচ্ছেদ এত সহজেই আসবে দ্বিজুবাবু, সত্যিই ঠেকান যাবে না ? দ্বিজদাস মাথা নাড়িয়া বলিল, না। ও-বস্তু যখন আসে তখন এমনি অবাধে এমনি কতই আসে, বারণ কিছুতে মানে না। যারা কাদবার সে র্কাদে, কিন্তু শেষ ঐখানে। ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিল, আপনি জানতে চাইছিলেন হেতু। বিস্তারিত জানিনে, কিন্তু যতটুকু জানি সে শুধু আপনাকেই বলবো, আর সাহায্য যদি কখনে চাইতে হয়, যেখানেই থাকুন সে কেবল আপনার কাছেই फ्रांशेद । কেবল আমার কাছেই কেন ? তার কারণ হাত যদি পাততেই হয় মহতের দ্বারে হাত পাতাই শাস্ত্রের বিধান । কিন্তু মহৎ কি আর কেউ নেই ? হয়ত আছে, কিন্তু ঠিকানা জানিনে। দাদার কথা তুলবো না, কিন্তু চিরদিন হাত পাতার অভ্যাস ছিল বৌদির কাছে, কিন্তু সে-পথ বন্ধ হ’লো। আপনি তার বোন, আমার দাবী তার থেকে । কিন্তু মা ? দ্বিজদাস বলিল, রথ যখন দ্রুত চলে মা তার অসাধারণ সারথি, কিন্তু চাকা যখন কাদায় বসে মা তখন নিরুপায়। নেমে এসে ঠেলতে তিনি পারেন না। সে দুর্দিনে যাব আপনার কাছে। দেবেন না ডিক্ষে ? ভিক্ষের বিষয় না জেনে বলবো কি করে দ্বিজুবাৰু? সে নিজেও জানিনে বন্দনা, সহজে চাইতেও যাব না। যখন কোথাও মিলবে না যাব শুধু তখনি। বদনা বহুক্ষণ অধোমুখে থাকিয়া মুখ তুলিয়া কহিল, যা জানতে চেয়েছিলুম বললেন না ? দ্বিজদাস বলিল, সমস্ত জানিনে, যা জানি তাও হয়ত অভ্রান্ত নয়। কিন্তু একটা বিষয়ে আমার সন্দেহ নেই যে দাদা আজ সৰ্ব্বস্বাস্তু। সমস্ত গেছে। বদন চমকিয়া উঠিল—মুখুয্যেমশাই সৰ্ব্বস্বাস্ত ? কি করে এমন হলো দ্বিন্ধুবাৰু? দ্বিজদাস বলিল, খুব সহজেই এবং সে ঐ শশধরের ষড়যন্ত্রে। সাহা-চৌধুরী কোম্পানী হঠাৎ যেদিন দেউলে হ'লে দাদারও সৰ্ব্বস্ব ডুবল সেই গহ্বরে! অথচ, এ শুধু বাইরের ঘটনা—যেটুকু চোখে দেখতে পাওয়া গেল। ভিতরে গোপন রইলো অল্প ইতিহাস । 窍够剑