পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস বদনা এ-কথা বলিল না যে, বুঝাইবার প্রয়োজনই বা কি ? অন্যপক্ষে বাপ-মায়ের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগ সত্য বলিয়া বিশ্বাস করাও তাহার কঠিন, বিশেষত: বিপ্রদাসের বিরুদ্ধে। কিন্তু তর্ক না করিয়া সে নীরব হইয়াই বুহিল। পরক্ষণে বক্তব্য স্পষ্টতর করিতে দ্বিজদাস কহিল, একটা সাম্বন বৌদি রইলেন কাছে নইলে দাদার হাতে দিয়ে আমার তিলাৰ্দ্ধ শাস্তি থাকতো না । বন্দনা কহিল, আপনি তো নিৰ্ব্বিকার, বাহুর ভালোমন্দ নিয়ে আপনার মাথাব্যথা কিসের ? যা হয় তা হোক না ? শুনিয়া দ্বিজদাসের মুখের উপর মৃতীক্ষু বেদনার ছায়া পড়িল, কিন্তু সে মৌন হইয়া রহিল। বন্দনা কহিল, দাদার প্রতি গভীর বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার কথা একদিন আপনার নিজের মুখে শুনেছিলুম। সেও কি ওই চোখের জলের মতো এক নিমিষে শুকিয়ে গেল ? কিংবা যে লোক নিজের দোষে সৰ্ব্বস্বাস্ত হয় তাকে বিশ্বাস করা চলে না এই কি অবশেষে বলতে চান ? দ্বিজদাস বিস্ময় ও ব্যথায় অভিভূত চক্ষে ক্ষণকাল তাহার প্রতি চাহিয়া রহিল, তাহার পরে দুই হাত এক করিয়া ললাট স্পর্শ করিয়া ধীরে ধীরে বলিল, না, সে আমি বলিনি। আমি বলছিলুম তৃষ্ণার জলের জন্তে মাহধে সমুদ্রের কাছে গিয়ে যেন না হাত পাতে। কিন্তু দাদার সম্বন্ধে আর আলোচনা নয়, বাইরের লোক তা বুঝবে না । এ কথায় বন্দনা অস্তরে অত্যন্ত আহত হইল, কিন্তু প্রতিবাদেরও কিছু খুজিয়া না পাইয়া স্তব্ধ হইয়া রহিল। দ্বিজদাস একেবারে অন্য কথা পাড়িল, জিজ্ঞাসা করিল, আপনি কি কালই বোম্বায়ে यांtवन ? বন্দন বলিল, ই । অশোকবাবুই নিয়ে যাবেন ? ই, তিনিই। দ্বিজদাস বলিল, বোম্বাই-মেল এখান থেকে বেশি রাতে র্যায়, কাল আপনাদের অামি স্টেশনে পৌছে দিয়ে আসবো । কিন্তু দিনের বেলায় থাকতে পারবো না, একটু কাজ আছে । বাবাকে একটা তার করে দেবেন ? আচ্ছা । মিনিট-দুই নীরব থাকিয়া, ইতস্তত: করিয়া দ্বিজদাস কহিল, একটা কথা আপনাকে জিজ্ঞাসা করবো ভাবি, কিন্তু নানা কারণে দিন বয়ে যায়, জিজ্ঞাসা করা 58?