পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জঙ্গন্ধার খোটা দিলেন ? জানেন না কি হচ্ছে আমার ? দীপালোকে স্পষ্ট দেখা গেল তাহার চোখের কোণদুটা অঞ্জবাপে ছল ছল করিয়া জাসিয়াছে। মৈত্রেী ঘরে ঢুকিল। বলিল, দ্বিজুবাবু, আপনি কখন বাড়ি এলেন আমরা তো কেউ জুনেতে পারিনি ? দ্বিজদাস ফিরিয়া দাড়াইল, বলিল, জানবার দরকার হয়েছিল নাকি ? মৈত্রেয়ী কহিল, বেশ কথা। আপনি কাল খাননি, আজ খাননি,—এ আর কেউ না জামুক আমি জানি। চলুন মা’র ঘরে। কিন্তু মা'র দরজা ত বন্ধ । মৈত্রেী বলিল, বন্ধই ছিল, কিন্তু আমি ছাড়িনি। মাথা খোড়া-খুড়ি করে দোর খুলিয়েচি, তাকে স্নান করিয়েচি, আহ্নিক করিয়েচি, জোর করে দুটো ফল মুখ গুজে দিয়ে থাইয়ে তবে ছেড়েচি। বলছিলেন, দ্বিন্ধু না খেলে খাবেন না । বললাম, সে হবে না মা, আপনার এ আদেশ আমি মানতে পারবো না। কিন্তু তখন থেকে সবাই আমরা আপনার পথ চেয়ে আছি। চলুন আপনার খাবার রেখে এসেচি মা’র ঘরে। দ্বিজদাস অবাক হইয়া রহিল। ইহার এত কথা সে পূর্বে শোনে নাই। বলিল, চলুন। মৈত্রেয়ী বন্দনাকে উন্ধেগু করিয়া বলিল, আপনিও আম্বন । মা আপনাকে ডাকচেন । এই বলিয়া সে দ্বিজদাসকে এক প্রকার গ্রেপ্তার করিয়া লইয়া গেল । সকলের পিছনে গেল বন্দনা। নিজের ঘরের মধ্যে দয়ামী ছিলেন বিছানায় শুইয়া । জহুজ্জল দীপালোকে তাহার শোকাচ্ছন্ন মুখের প্রতি চাহিলে ক্লেশ বোধ হয়। পরিস্ফীত দুই চক্ষু জারত্ত, সন্তস্নাত আৰ্দ্ৰ কেশগুলি জালুথালু বিপৰ্য্যন্ত। শিয়রে বলিয়া কল্যাণী হাত বুলাইয়া জিতেছিল, অন্য দিকে একটা চেম্বারে শশধর, দূরে আর একটা চেম্বারে বসিয়া অক্ষয়বাৰু। দ্বিজদাস ঘরে ঢুকিতেই দয়ামী মুখ ফিরিয়া গুইলেন, এবং পরঙ্গগেই একটা অফুট ক্রম্বনের অবরুদ্ধ আক্ষেপে র্তাহার সর্বদেহ ক্ষপিয়া কঁাপিৰা উঠিল। বন্ধন নীরবে ধীরে ধীরে গিয়া তাহার পায়ের কাছে বসিল, এতবড় ব্যথার দৃপ্ত বোধ করি সে কখনো কল্পনা করিতেও পারিত না । বহুক্ষণ পৰ্য্যস্ত সকলেই নিৰ্ব্বাক, এই স্তৱতা ভঙ্গ করিয়া প্রথমে কথা বলিল শশধর । বলিঙ্গ, কাল থেকে গুনটি না খেয়েই আছে,—যা হোক দু’টো মুখে দাও । দ্বিজদাস বলিল, ই । যেবের উপর ঠাই করি মৈত্রেী সযত্নে খাবার গুছাইয়া জিতেছিল, সেইদিকে চাহিয়া শশধর পুনশ্চ কছিল, তোমাৰ ফিরতে দেরি হল যে ! উারা গেলেম ক্ষে লেই আড়াইটার গাড়িতে ? t}