পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রই

  • দ্বিজদাস কয়েক মুহূৰ্ত্ত চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, দু-তিন মাসের কম হৰে না। কাজের কত ক্ষতি হবে ভেবে দেখেচো বৌদি ?

সতী স্বীকার করিয়া বলিল, ক্ষতি কিছু হবেই। কিন্তু একটা নতুন জায়গাও দেখা হবে । নিজের তরফ থেকে একে নিছক লোকসান বলা চলে না। লক্ষ্মী ভাইটি, পরে যেন আর আপত্তি ক’রো না। 聯 দ্বিজদাস কহিল, তুমি যখন আদেশ করেচ, তখন আপত্তি আর করব না, সঙ্গে যাব। কিন্তু মা অনায়াসে সেদিন দাদাকে বলেছিলেন, আমার কলকাতার পড়ার খরচ বন্ধ করে দিতে । সতী সহস্তে বলিল, ওটা রাগের কথা ভাই। কিন্তু হুকুম যিনি দিলেন, তিনি ম ছাড়া জার কেউ নয়। এ কথাটাও তোমার ভুললে চলবে না। দ্বিজদাস উত্তর দিল, ভুলিনি বৌদি ! কিন্তু সেদিন থেকে আমিও কি স্থির করেচি জান ? আমি একলা মানুষ, বিয়ে করবার আমার কখনো সময় হবে না, স্থযোগও ঘটবে না । সুতরাং খরচ সামান্য । আবস্তক হলে বরঞ্চ ছেলে পড়িয়ে খাব, কিন্তু এদের এস্টেট থেকে একটা পয়সাও কোনদিন চাইব না । সতী পুনরায় হাসিয়া কহিল, চাইবার দরকার হবে না ঠাকুরপো, আপনি এসে হাজির হবে। আর তাও যদি না আসে তোমার ছেলে পড়াবার প্রয়োজন হবে না। অন্তত: আমি বেঁচে থাকতে নয়। সে ভার আমার রইল । এ বিশ্বাস দ্বিজুরও মনের মধ্যে স্বতঃসিদ্ধের ন্যায় ছিল, পলকের জন্য তাহার চোখের পাতা ভারি হইয়া উঠিল, কিন্তু সে ভাবটা তাড়াতাড়ি কাটাইয়া দিয়া জিজ্ঞাসা করিল, এরা কবে যাত্রা কববেন স্থির করচেন ? যবেই করুন, শেষকালে আমাকেই সঙ্গে যেতে হল! অথচ মা সেদিন স্পষ্ট করেই বলেছিলেন যে আমার মত মেচ্ছাচারীকে নিয়ে তিনি বৈকুণ্ঠে যেতেও রাজি নন। একেই বলে অদৃষ্টের পরিহাস, না বৌদি ? - সতী এ অঞ্ছযোগের জবাব দিল না, চুপ করিয়া রহিল। দ্বিজু বলিল, সে যাই হোক, তোমার আদেশ অমান্য করব না বোঁদি, তাদের নিশ্চিন্তু থাকতে ব’লো । 'সতী হাসিল, কহিল, আমাকে পাঠিয়ে দিয়ে তারা নিশ্চিস্ত আছেন। ঘর থেকে বার হওয়া মাত্র তোমার দাদার কথা কানে গেল, তিনি জোর গলায় মাকে বলছিলেন, এবার নির্ভয়ে যাত্রার আয়োজন করগে মা, যাকে দৌত্যকৰ্ম্মে নিযুক্ত করা গেল তার স্বমুখে ভায়ার তর্ক চলবে না। ঘাড় হেট করে স্বীকার করবে ভূমি । দেখে নিয়ো । - শুনিয়া দ্বিজদাস ক্রোধে ক্ষণকাল স্তন্ধ থাকিয়া বলিল, অস্বীকার করতে পারব না, . テ *