পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰই দ্বিজদাস বলিল, পুরুষমানুষে তাই করে। ওরা অস্কায় মানে না। আপনিও তাই করবেন নাকি ? আগে একটাই ত করি তার পরে অন্তটার কথা ভাববো । মৈত্রেী বলিল, এমন করে বললে ত চলবে না। তখন আপনার বৌদিদি ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি নেই। মাকে দেখবে কে ? দ্বিজদাস বলিল, কে দেখবে জানিনে মৈত্রেয়ী, হয়ত মেয়ে-জামাই দেখবে, হয়ত আর কেউ এসে তার ভার নেবে,–সংসারে কত অসম্ভবই যে সম্ভব হয় কেউ নির্দেশ করতে পারে না । আমাদের কথা থাকৃ, তোমার নিজের কথা বলে । কিন্তু আমার নিজের কথা ত কিছু নেই। কিছুই নেই? একেবারে কিছু নেই ? মৈত্রেী প্রথমে একটু জড়সড় হইয়া পড়িল, তার পরে একটু হাসিয়া বলিল, ও আমি বুঝেছি। আপনি চৌধুরীমশায়ের কথা কারো কাছে শুনেচেন বুঝি ? ছি ছি, কি নির্লজ্জ মানুষ, দিদি মরতে প্রস্তাব করে পাঠালেন আমাকে বিয়ে করবেন। তার পরে ? মৈত্রেয়ী বলিল, চৌধুরীমশায়ের অনেক টাকা, বাবা-মা দুজনেই রাজি হয়ে গেলেন, বললেন, আর কিছু না হোক লীলার ছেলে-মেয়েগুলো মাচুর্য হবে। যেন সংসারে আমার আর কিছু কাজ নেই দিদির ছেলে মাহুষ করা ছাড়া । বললুম, ও কথা তোমরা মুখে আনলে আমি গলায় দড়ি দেবো। কেন, এতে আপত্তি তোমার কিসের ? আপত্তি হবে না ? জগতে এত বড় অশান্তি আর-কিছু আছে নাকি ? দ্বিজদাস বলিল, এ-কথা তোমার সত্যি নয় । জগতে সকল ক্ষেত্রেই অশাস্তি আসে ন মৈত্রেী। অামার মা দাদাকে মানুষ করেছিলেন । মৈত্রেয়ী বলিল, কিন্তু শেষ পৰ্য্যন্ত তার ফল হ’লো কি । আজকের মত দুঃখের ব্যাপার এ-বাড়িতে আর কখনো এসেচে কি ? দ্বিজদাস স্তব্ধ হইয়া রহিল । ইহার কথা মিথ্যা নয়, কিন্তু সত্যিও কিছুতে নয় । মিনিট দুই-তিন অভিভূতের মত বসিয়া অকস্মাৎ যেন তাহার চমক ভাঙিয়া গেল, বলিল, মৈত্রেয়ী, প্রতিবাদ আমি করবো না । এ-পরিবারে মহাদুঃখ এলো সত্যি, তবু জানি, তোমার এ-কথা সাধারণ মেয়েদের অতি তুচ্ছ সাংসারিক হিসাবের চেয়ে বড় নয়। বলিয়াই সে উঠিয়া দাড়াইল, তাহার খাওয়া শেষ হইয়া গিয়াছিল। পরদিন সমস্ত দুপুর-বেলা সে বাড়ি ছিল না, কি কাজে কোথায় গিয়াছিল সে-ই, Sto