পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রহ মনের মধ্যে ছিল, কিন্তু বোনকির মেজাজের যেটুকু পরিচয় পাইয়াছেন তাহাতে ভগিনীপতি রে সাহেবের দরবারে প্রকাশ্বে মালিশ রুজু করিবার সাহস ছিল না, তথাপি খাবার টেবিলে বসিয়া কথাটা তিনি ইঙ্গিতে পাড়িলেন। বলিলেন, মিস্টার রে, এটা আপনি লক্ষ্য করেছেন কি-না জানিনে, কিন্তু আমি অনেক দেখেচি বাপমায়ের এক ছেলে কিংবা এক মেয়ে এমনি একগুঁয়ে হয়ে ওঠে যে তাদের সঙ্গে পেরে ওঠা যায় না । সাহেব তৎক্ষণাং স্বীকার করিলেন, এবং দেখা গেল দৃষ্টান্ত র্তাহার হাতের কাছেই মজুত আছে। সানন্দে তাহার উল্লেখ করিয়া বলিলেন, এই যেমন আমার বুড়ী । একবার না বললে ই বলায় সাধ্য কার ? ওর ছেলেবেলা থেকে দেখে আসছি। বন্দনা কহিল, তাই বুঝি তোমার অবাধ্য মেয়েকে ভালবাস না বাবা ? সাহেব সজোরে প্রতিবাদ করিলেন, তুমি আমার অবাধ্য মেয়ে ? কোনদিন না। কেউ বলতে পারে না । বন্দন হাসিয়া ফেলিল,—এই মাত্র যে তুমিই বললে বাবা। আমি ? কখনো না । শুনিয়া মাপী পৰ্য্যন্ত না হাসিয়া পারিলেন না। বন্দন প্রশ্ন করিল, মাছ! বাবা, তোমার মতো আমার মাও কি আমাকে দেখতে পারতেন না ? সাহেব বলিলেন, তোমার মা ? এই নিয়ে তার সঙ্গে আমার কতবার ঝগড় হয়েচে । ছেলেবেলায় তুমি একবার আমার ঘড়ি ভেঙেছিলে। তোমার মা রাগ করে কান মলে দিলেন, তুমি কালতে কালতে পালিয়ে এলে আমার কাছে। আমি বুকে তুলে নিলাম । সেদিন তোমার মার সঙ্গে আমি সারাদিন কথা কইনি । বলিতে বলিতে তিনি পূৰ্ব্বস্তুতির আবেগে উঠয় আসিয়া মেয়ের মাথাটি বুকের কাছে টানিয়া গইয়া ধীরে ধীরে হাত বুলাইয়া দিলেন । পন্দনা বলিল, ছেলেবেলার মতো এখন কেন ভালবাস না বাবা ? সাহেব মাসীকে আবেদন করিলেন—শুনলেন মিসেস ঘোষাল, বুড়ীর কথা ? বন্দনা কহিল, কেন তবে যখন তখন বলে আমার বিয়ে দিয়ে ঝঙ্কাট মিটিয়ে ফেলতে চাও? আমি বুঝি তোমার চোখের বালি ? শুনছেন মিসেস ঘোষাল, মেয়েটার কথা ? মাস বলিলেন, সত্যি বন্দনা। মেয়ে বড় হলে বাপ-মায়ের কি যে বিষম দুশ্চিস্তা নিজের মেয়ে হলে একদিন বুঝবি ! আমি বুঝতে চাইনে মাসীম । 》蛟