পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ জানিয়াছেন, তাহ চক্ষু-লজ্জায় ভ্রষ্ট হইতে দিলে ফিরিয়া আনা হয়ত দুরূহ হইবে । সঙ্কোচ অতিক্রম ক্ষরিয়া বলিলেন, মিস্টার রে, একটা কথা ছিল, যদি সময় না— সাহেব তৎক্ষণাৎ বসিয়া পড়িয়া কহিলেন, না না, সময় আছে বই কি। বলুন কি কথা । * * * * t মাসী বলিলেন, আমি শুনেচি বন্দনার অমত নেই। অশোক অর্থশালী নয় সত্য, কিন্তু স্বশিক্ষা ও চরিত্রবলে struggle করে একদিন ও উঠবেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস । মাপনি যদি ওকে আপনার মেয়ের অযোগ্য বিবেচনা না করেন-- সাহেব আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিলেন, কিন্তু সে কি করে হতে পারে মিসেস ঘোষাল । অশোক আপনার ভাই-পো, সম্পর্কে সেও তো বন্দনার মামাতো ভাই । মালী বলিলেন, শুধু নামে, নইলে বহু দূরের সম্বন্ধ। আমার দিদিমা এবং বদনার মায়ের দিদিমা দুজনে বোন ছিলেন, সেই সম্পর্কেই বদনার আমি যাসী। এ বিবাহ নিষিদ্ধ হতে পারে না মিস্টার রে। । সাহেব কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন, বোধ হয় মনে মনে কি একটা হিসাব করিলেন, তারপর বলিলেন, অশোককে যতটুকু আমি নিজে দেখেচি এবং যতটুকু বন্দনার মুখে শুনেচি তাতে অযোগ্য মনে করিনে। মেয়ের বিয়ে একদিন আমাকে দিতেই হবে, কিন্তু তার নিজের অভিমত জানা দরকার । , মাসী স্নেহের কণ্ঠে উৎসাহ দিয়া কহিলেন, লজ্জা কোরো না যা, বঙ্গ তোমার বাবাকে কি তোমার ইচ্ছে । বদনার মুখ পলকের জন্ত রাঙা হইয়া উঠিল, কিন্তু পরক্ষণে সুস্পষ্ট স্বরে বলিল, আমার ইচ্ছেকে আমি বিসর্জন দিয়েছি মাসীমা । সে খোজ করার দরকার নেই। সাহেব সভয়ে কহিলেন, এর মানে ? বন্দন বলিল, মানে ঠিক তোমাদের আমি বুঝিয়ে বলতে পারবো না বাবা। কিন্তু তাই বলে ভেবে না যেন আমি বাধা দিচ্চি। একটু থামিয়া কহিল, আমার সতী দিদির বিয়ে হয়েছিল তার ন’বছর বয়সে । বাপ- মা র্যার হাতে তাকে সমর্পণ করলেম মেজদিদি তাকেই নিলেন, নিজের বুদ্ধিতে বেছে নেননি। তবু ভাগ্যে ধাকে পেলেন সে-স্বামী জগতে ছন্ন ভ। আমি সেই ভাগ্যকেই বিশ্বাস করবো বাবা। বিপ্রাসবাৰু সাধুপুরুষ, আসবার আগে আমাকে আশীৰ্ব্বাদ করে বলেছিলেন যেখানে আমার কল্যাণ ভগবান সেখানেই আমাকে দেবেন। তার সেই কথা কখনো মিথ্যে হবে না। তুমি আমাকে যা আদেশ করবে আমি তাই পালন করবো। মনের মধ্যে কোন সংশয়, কোন ভয় রাখবে না । - . সাহেব বিস্ময়ে স্থির হইয়া তাহার প্রতি চাহিয়৷ রছিলেন, মুখ দিয়া একটা কথাও বাহির হইল না । • , אשל י