পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস মাসী বলিগেন, বিয়ের সময় তোমার মেজদি ছিলেন বালিকা, তাই তার মতামতের প্রশ্নই ওঠেনি। কিন্তু তুমি তা নও, বড় হয়েচো, নিজের ভাল-মন্সের দায়িত্ব তোমার নিজের এমন চোখ বুজে ভাগ্যের খেলা দেখা ত তোমার সাজে না বন্দন ! সাজে কি না জানিনে মাঙ্গীমা, কিন্তু তার মতো তেমনি করেই ভাগ্যকে আমি প্রসন্নমনে মেনে নেবো । কিন্তু এমন উদাসীনের মতো কথা বললে তোমার বাবা মনঃস্থির করবেন কি করে ? যেমন করে ওঁর দাদা করেছিলেন সতীদিদির সম্বন্ধে, যেমন করে ওঁর সকল পূৰ্বপুরুষরাই দিয়েচেন তাদের ছেলে-মেয়েদের বিবাহ, আমার সম্বন্ধে বাবা তেমনি করেই মন:স্থির করুন । তুমি নিজে কিছুই দেখবে না, কিছুই ভাববে না ? ভাব-ভাবি, দেখা-দেখি অনেক দেখলুম মাসীম । আর না। এখন নির্ভর করবে। বাবার আশীৰ্ব্বাদের আর সেই ভাগ্যের পরে, যার শেষ কেউ আজও দেখতে পায়নি । মাসী হতাশ হইয়া একটুখানি তিক্তকণ্ঠে বলিলেন, ভাগ্যকে আমরাও মানি কিন্তু তোমার সমাজ, শিক্ষা, সংস্কার সব ডুবিয়ে দিয়ে মুখুয্যেদের এই ক’দিনের সংস্রব যে তোমাকে এতখানি আচ্ছন্ন করবে তা ভাবিনি তোমার কথা শুনলে মনে হয় না যে তুমি আমাদের সেই বন্দনা। যেন একেবারে আমাদের থেকে পর হয়ে গেছে । বনানা বলিল, না মার্সীম, আমি পর হয়ে যাইনি । তাদের আপনার করতে আমার কাউকে পর করতে হবে না এ-কথা নিশ্চয় জেনে এসেচি। আমাকে নিয়ে তোমরা কোন শঙ্কা কোরে না ; মাসী জিজ্ঞাসা করিলেন, তা হলে অশোককে আসতে একটা টেলিগ্রাম করে हेि ? দাও। আমার কোন আপত্তি নেই। এই বলিয়া বনানা ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । মিস্টার রে, অ। রে নাম করেই তবে টেলিগ্রামটা পাঠাই—বলিয়া মাসী মুখ তুলিয়া সবিস্ময়ে দেখিলেন সাহেবের দুই চোখ অকস্মাং ধাপাকুল হইয়া উঠিয়াছে । ইহার কারণ খুজিয়া পাইলেন না এবং সাহেব ধীরে ধীরে যখন বলিলেন, টেলিগ্রাম আজ থাক মিসেস ঘোষাল, তখনও হেতু বুঝিতে না পারিয়া বলিলেন, থাকবে কেন মিস্টার রে, বন্দনা ত সম্মতি দিয়ে গেল । না না, আজ থাক, বলিরা তিনি নিৰ্ব্বাক হইয়া ঘহিলেন। এই নীরবতা এবং ראיל