পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ঐ অশ্রুঞ্জল মাসীকে ভিতরে ভিতরে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ করিল। একজন প্রবীণ পদস্থ লোকের এইরূপ সেটিমেণ্টালিটি তাহার অসহ্য । কিন্তু জিদ করিতেও সাহস করিলেন না। মিনিট-দুই চুপ করিয়া থাকিয়া সাহেব বলিলেন, ওর বাপের ভাবনা আমি ভেবেচি, কিন্তু ওর মা নেই, তার ভাবনা ও আমাকেই ভাবতে হবে মিসেস ঘোষাল । একটু সময় চাই । মাদী মনে মনে বলিলেন, আর একটা স্ট,পিড সেন্টিমেন্টালিটি। সাহেব অনুমান করিলেন কি-না জানি না, কিন্তু এবার জোর করিয়া একটু স্নান হাসিয়া বলিলেন, মৃস্কিল হয়েচে ওর কথা আমরা কেউ ভালো বঝতে পারিনে। শুধু আজ নয়, বাঙল থেকে আসা পর্য্যন্তই মনে হয় ঠিক যেন ওকে বুঝতে পারিনে ও সম্মতি দিলে বটে কিন্তু সে-ও না ওর নতুন রিলিজন ভেবেই পেলুম না। নতুন রিলিজন মানে ? মানে আমিও জানিনে । কিন্তু বেশ দেখতে পাই বাঙলা থেকে ও কি যেন একটা সঙ্গে করে এনেচে, সে রাত্ৰি-দিন থাকে ওকে ঘিরে । ওর খাওয়া গেছে বদলে, কথা গেছে বদলে, ওর চলা-ফেরা পর্যন্ত মনে হয় যেন আগেকার মতো নেই। ভোরবেলাধু স্নান করে আমার ঘরে গিয়ে পারের ধুলো মাথার নেয়। বলি, বুড়ী, আগে তো তুই এ-সব করতিস্নে ? তখন জানতুন না বাবা। এখন তোমার পরের ধূলো মাথায় নিয়ে দিন আরম্ভ করি। বেশ বুঝতে পারি সে আমাকে সমস্ত কাজে রক্ষে করে চলে । বলিতে বলিতে র্তাহার চক্ষু পুনরায় শ্রীপঞ্জল হইয়| উঠিল। মাদী মনে মনে অত্যন্ত বিরক্ত হই বললেন, এ-সব নতুন ধাচ fT 4THL5 ও মুখুয্যেদের বাড়িতে। জানেন ত শ্লরা কি-রকম গোড় ? কিন্তু এ-কে রিলিজন বলে না, বলে কুসংস্কার। ও পুজো-টুড়ো করে নাকি? । সাহেব বলিলেন, জানিনে করে কি না। হয় ত করে না। কুসংস্কার বলে আমারও মনে হয়েচে, নিষেধ করতেও গেছি, কিন্তু বুীি আগেকার মতো আর তো তর্ক করে না, শুধু চুপ করে চেয়ে থাকে। আমারও মুখ যায় বন্ধ হয়ে—কিছুই বলতে পারিনে । - মাপী বলিলেন, এ আপনার দুর্বল তা ! কিন্তু নিশ্চিত জানবেন একে রিলিজন বলে না, বলে শুধু স্পারাষ্ট্রশন ? একে প্রশয় দেওয়া অন্যায় ! অপরাধ ! সাহেব দ্বিধাভরে আস্তে আস্তে বলিলেন, তাই হবে বোধ হয়। রিলিজন কথাটা মুখেই বলি, কখনো নিজেও চর্চা করিনি, এব নেচার কি তা-ও জানিনে, শুধু মাঝে মাঝে অবাক হয়ে ভাবি মেয়েটাকে এমন আগাগোড়া বদলে দিলে কিসে? সে হাসি নেই, আনন্দের চঞ্চল তা নেই, বর্ধাদিনের ফুটন্ত ফুলের মতো পাপড়িগুলি যেন জলে

Rakr