পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস ভিজে। কখনো ডেকে বলি, বুড়ি, আমাকে লুকোসনে মা, তোর ভেতরে কোন অসুখ করেনি ত ? অমনি হেসে মাথা দুলিয়ে বলে, না বাবা, আমি ভালো আছি, আমার কোন অমূখ নেই। হাসিমুখে ঘরের কাজে চলে যায়, আমার কিন্তু বুকের পজরুভেঙে পড়তে চায় মিসেস ঘোষাল ! ঐ একটি মেয়ে, মা নেই, নিজের হাতে মানুষ করে এত বড়টি করেচি,—সৰ্ব্বস্ব দিয়েও যদি আমার সেই বদনাকে - আবার তেমনি ফিরে পাই— মালী জোর দিয়া বলিলেন, পাবেন। আমি কথা দিচ্ছি পাবেন। এ শুধু একটা সাময়িক অবসাদ, ধৰ্ম্মের ঝোক হলেও হতে পারে, কিন্তু অত্যন্ত অসাড় । কেবল ওঁদের সংসর্গের আসার ক্ষণিক বিকার । বিবাহ দিন, সমস্ত দুদিনেই সেরে যাবে। চিরদিনের শিক্ষাই মানুষের থাকে মিস্টার রে, দুদিনের বাতিক দুদিনেই ফুরোয় । সাহেব আশ্বস্ত হইলেন, তথাপি সন্দেহ ঘুচিল না। বলিলেন ও কোথায় কার কাছে কি প্রেরণা পেলে জানিনে, কিন্তু শুনেচি সে যদি আসে সত্যিকার মানুষ থেকে কিছুতে সে ঘোচে না । মানুষের চিরদিনের অভ্যাস দেয় একমুহূর্তে বদলে । নেশা গিয়ে মেশে রক্তের ধারায়, সমস্ত জীবনে তার আর ঘোর কাটে না ! সেই আমার ভয় মিসেস ঘোষাল । প্রভুত্তরে মাসী একটু অবজ্ঞার হাসি হাসিলেন, বলিলেন, বাজে বাজে। আমি অনেক দেখেচি মিস্টার রে—দুদিন পরে আর কিছু থাকে না। আবার যা’কে তাই হয়, কিন্তু বাড়তে দেওয়াও চলবে না,—আজই অশোককে একটা তার করে দিই—সে এসে পড়ুক । অজই দেবেন ? ই, আজই। এবং আপনার নামেই । সাহেব মুম্বুকণ্ঠে সম্মতি জানাইয়া বলিলেন, যা ভালো হয় করুন। আমি জানি অশোক ভালো ছেলে । চরিত্রবান, সং—ত নইলে ওকে নিয়ে বন্দনা কিছুতে আসতে রাজি হ’তো না । মাসী এই কথাটাকেই আর একবার ফাপাইয়া ফুলাইয়া বলিতে গেলেন, কিন্তু বাধা পড়িল । বন্দনা ঘরে ঢুকিয়া বলিল, বাবা, আজ হাজি সাহেবের মেয়েরা আমায় চায়ের নেম উন্ন করেচে। দুপুরবেলা যাবো, বিকালে অফিসের ফেরত আমাকে বাড়ি নিয়ে এসো। মাসী প্রশ্ন করিলেন, তাদের বাড়িতে তুমি ত কিছু খাবে না বন্দন ? ' না মাসীমা । কেন ? - ১৬৯ श्*-२९ * *