পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রম{ রমা। তুই এখন যা, আমি একটুখানি পরে যাবে ভাই ।

  • [ যতীন প্রস্থান করিল ]

[ বিশ্বেশ্বরী প্রবেশ করিলেন ] রমা । আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন জ্যাঠাইমা ? বিশ্বেশ্বরী। এ-সব তোরা কি করেচিস মা ! বেণীর চুরি-করার কাজে তুই কি করে সাহায্য করলি রমা ? রম । আমি ত একাজ করতে র্তাকে বলিনি জ্যাঠাইমা ! বিশ্বেশ্বরী। স্পষ্ট বলনি বটে, তবুও অপরাধ তোমার কম হয়নি রমা। রমা। কিন্তু তখন যে আর উপায় ছিল না জ্যাঠাইমা । ভজুয়া লাঠি-হাতে বাড়ির মধ্যে গিয়ে যখন দাড়ালো তখন মাছ ভাগ হয়ে গিয়েছিল । বড়দা তার ভাগ নিয়ে চলে আসছিলেন, পাড়ার পাচজনেও দুটো-একটা নিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। বিশ্বেশ্বরী। কিন্তু আসলে মাছ আদায় করতে সে যায়নি রমা। রমেশ মাছংস ছোয় না, এতে তার প্রয়োজন নেই। সে শুধু তোমারই কাছে জানতে পাঠিয়েছিল কাপাসডাঙার গড়পুকুরে তার অংশ আছে কি না। নেই, এ-কথা তুই বললি কি কোরে মা ? [ রমা অধোমুখে নিরুত্তর } বিশ্বেশ্বরী। তোমার পরে যে তার কত শ্রদ্ধা, কত বিশ্বাস, সে তুমি জান না বটে, কিন্তু আমি জানি। সেদিন তেঁতুলগাছটা কাটিয়ে তোমরা দু’ঘরে ভাগ কোরে নিলে ; গোপাল সরকারের কথাতেও রমেশ কান দিলে না, বললে, আমার ভাগ •থাকলে আমি পাবই। রমা কখনো আমাকে ঠকিয়ে নেবে না । কিন্তু কাল যা করেচ মা, তাতে একটা কথা তোমাকে আজ বলে রাখি মা। বিষয়-সম্পত্তির দাম যত বেশিই হোক, এই মামুষটির প্রাণের দাম তার অনেক বেশি। কারও কথায়, কোন বস্তুর লোভেই, রুমা, চারিদিকের আঘাত দিয়ে এ-জিনিসটি নষ্ট কোরে না। যা হারাবে তা আর কোনদিন পূর্ণ হবে না। রমেশ । ( নেপথ্যে ) জ্যাঠাইমা ! বিশ্বেশ্বরী। কে, রমেশ ? অায় বাবা এই ঘরে আয়ু । [ রমেশ প্রবেশ করিতেই রমা আনতমুখে ঈষৎ আড় হইয়া বসিল ] বিশ্বেশ্বরী । হঠাৎ এমন দুপুরবেলা যে রে ? রমেশ । দুপুরবেলা না এলে যে তোমার কাছে একটু বসতে পাইনে জ্যাঠাইমা । তোমার কত কাজ । হাসলে যে ? আচ্ছা, তোমার মনে পড়ে জ্যাঠাইমা, ঠিক এমনি দুপুরবেলায় ছেলেবেলায় একদিন চোখের জলে তোমার কাছে বিদায় নিয়েছিলাম। আজও তেমনি নিতে এলাম। কিন্তু এই বোধ হয় শেষ নেওয়া জ্যাঠাইমা ! জ্যাঠাইমা। বালাই, ষাট ! ও কি কথা বাবা ? আয় আমার কাছে এসে বোস । a)為