পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কাগজ পড়েম মা ? না। ও আমার ধৈর্ঘ্য থাকে না। সন্ধ্যা-বেলা বাবার মুখে গল্প শুনি, তাতেই আমার ক্ষিধে মিটে । আশ্চৰ্য্য ! আমি ভেবেছিলাম আপনি নিশ্চয়ই খুব বেশি পড়েন। 鬱 বন্দন বলিল, আমার সম্বন্ধে কিছুই না জেনে অমন ভাবেন কেন ? ভারি অন্যায়। দ্বিন্ধু অপ্রতিভ হইয়া উঠিতেছিল, বন্দন হাসিয়া কহিল, আপনার কে কতটা দেশোদ্ধার করলেন, এবং ইংরেজ তাতে রেগে গিয়ে কতখানি চোখ রাঙালে তার কিছুতেই আমার কৌতুহল নেই। আছে বাবার। ঐ দেখুন না, একেবারে খবরের তলায় তলিয়ে গেছেন-বাহ্যজ্ঞান নেই। সাহেবের কানে বোধ করি শুধু মেয়ের বাবা কথাটাই প্রবেশ করিয়াছিল, কিন্তু চোখ তুলিবার সময় পাইলেন না, বলিলেন, একটু সৰুর কর—বলচি–ঠিক এই জবাবটাই আমি খুঁজছিলাম। মেয়ে মুচকিয়া হাসিয়া ঘাড় নাডিল, কহিল, তুমি খুঁজে খুজে সারা দিন পড় বাবা, আমার একটুও তাড়াতাডি নেই। দ্বিজদাসকে লক্ষ্য করিয়া বলিল, মেজদির মুখে শুনেচি, আপনার মস্ত লাইব্রেরি আছে, বরঞ্চ সেইখানে চলুন, দেখিগে আপনার কত বই জমেচে । চলুন। লাইব্রেরি ঘরটা তেতলায়। মস্ত চওড়া সিড়ি, উঠিতে উঠিতে দ্বিজদাস কহিল, লাইব্রেরি বেশ বড়ই বটে, কিন্তু আমার নয়, দাদার। আমি শুধু কোথায় কি বই বেরুলো সন্ধান নিই এবং হুকুম-মত কিনে এনে দিই। কিন্তু পড়েন ত আপনি ? সে কিছুই নয়। পড়েন র্যার লাইব্রেরি তিনি স্বয়ং। আশ্চৰ্য্য শক্তি এবং তেমনি অদ্ভূত মেধা তার। কে? দাদা ! ই্য । ইউনিভারসিটির ছাপ-ছোপ বিশেষ কিছু তার গায়ে লাগেনি সত্যি, কিন্তু মনে হয় এত বড় বিরাট পাণ্ডিত্য এদেশে কম লোকেরই আছে। হয়ত নেই। আপনার ভগিনীপতি তিনি, কখন দেখেননি তাকে ? না। কি রকম দেখতে ? ঠিক জামার উন্টে। যেমন দিন আর রাত । আমি কালো, তার বর্ণ সোনার মত। গায়ের জোর উঁর এ অঞ্চলে বিখ্যাত—লাঠি, তলোয়ার, বন্ধুকে এদিকে তার জোড় নেই। একা মা ছাড়া তার মুখের পানে চেয়ে কথা কইতেও কেউ সাহল কয়ে না । tు