পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/২৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्लभों রষা। (মুখ তুলিয়া ক্ষণকাল অপলক-চক্ষে রমেশের মুখের প্রতি চাহিয়া রহিল ) আগে কথা দিন । রমেশ । ( মাথা নাড়িয়া ) তা পারিনে । তোমাকে কোন প্রশ্ন না করেই কথা দেবার শক্তি যে তুমি নিজের হাতেই ভেঙে দিয়েচ রমা। রমা। আমি ভেঙে দিয়েচি ? রমেশ । তুমিই। তুমি ছাড়া এ শক্তি সংসারে আর কারু ছিল না। রম, আজ তোমাকে একটা সত্য কথা বলব।—ইচ্ছে হয় বিশ্বাস কোরো, ইচ্ছে না হয় কোরো না । কিন্তু জিনিসটা যদি না মরে একেবারে নিঃশেষ হয়ে যেতো, হয়ত এ কথা তোমাকে কোনদিন শোনাতে পারতাম না ; কিন্তু আজ নাকি আর কোন পক্ষেই লেশমাত্র ক্ষতির সম্ভবনা নেই, তাই আজ জানাচ্চি সেদিন পর্য্যস্তও তোমাকে আদেয় আমার কিছুই ছিল না । কিন্তু কেন জানো ? রমা । ( মাথা নাড়িয়া জানাইল ) না । রমেশ । কিন্তু শুনে রাগ কোরো না । লজ্জাও পেয়ো না । মনে কোরে এ কোন পুরাকালের একটা গল্প শুনচ মাত্র । তোমাকে ভালবাসতাম রমা। মনে হয়, তেমন ভালবাসা বোধহয় কেউ কখনো বাসেনি। ছেলেবেলায় মা'র মুখে শুনেছিলাম, আমাদের বিয়ে হবে। তারপরে, যেদিন সমস্ত ভেঙে গেল, সেদিন—কত বছর কেটে গেল, তবুও মনে হয় সে বুঝি কালকের কথা । [ রম তাহার মুখের প্রতি চাহিয়া পলকের জন্য শিহরিয়া আবার স্তন্ধ অধোমুখে নিশ্চল হইয়া রহিল ] রমেশ । তুমি ভাবছ তোমাকে এ-সব কাহিনী শোনানো অন্যায়। আমার মনেও এ সন্দেহ ছিল বোলেই সেদিন তারকেশ্বরে যখন একটি দিনের সমাদরে আমার সমস্ত জীবনের ধারা বদলে দিয়ে গেল, সেদিনও চুপ করেই ছিলাম। চুপ করেই ছিলাম, কিন্তু সে নীরবতার ব্যথা মাপবার মানদণ্ড হয়ত শুধু অন্তর্যামীর হাতেই আছে। রমা । ( কিছুতেই যেন আর সহিতে পারিল না ) যা তার হাতে আছে তা তার হাতেই থাক্‌ না রমেশদ । রমেশ । তাই ত আছে রমা । রমা। তবে-তবে, আজকেই বা বাড়িতে পেয়ে আমাকে অপমান করচেন কেন ? রমেশ । অপমান! কিছুমাত্র না। এর মধ্যে মান-অপমানের কথা নেই। এ যাদের কাহিনী শুনচো, সে রুমাও তুমি কোনদিন ছিলে না, সে রমেশও আর আমি নেই । রমা। রমেশদ, আপনার নিজের কথাই বলুন। রমার কথা আমি আপনার চেয়ে । বেশী জানি ।

ፀ»