পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ রমেশ । তোমার ভয় নেই, বড়া যাই কেন না জামাকে বলুন, আমি চুরি করতে পূৰ্ব্বেও কখনো কাউকে সাহায্য করিনি, এখনো করব না। আর যদি দান করতেই চাও, তার জন্তে অন্ত লোক অাছে। আমি দান গ্রহণ করিনে । রম। আমি জানি রমেশন, তুমি চুরি করতে সাহায্য করবে না। আর নিলেও সে তুমি নিজের জন্তে নেবে না সেও আমি জানি। কিন্তু তা ত নয়। দোষ করলে শাস্তি হয়। আমি যত অপরাধ করেচি, এটা তারই দণ্ড বলে কেন গ্রহণ কর না ? রমেশ তোমার দ্বিতীয় অম্বরোধ ? রম । আমার যতীনকে আমি তোমার হাতে দিয়ে গেলাম - রমেশ । দিয়ে গেলাম মানে ? - রমা। (রমেশের মুখের প্রতি চাহিয়া ) একদিন কোন মানেই তোমার কাছে গোপন থাকবে না রমেশদl,—তাই, আমার যতীনকে আমি তোমাকেই দিয়ে যাব । তাকে তোমার মত করেই মানুষ কোরো। বড় হয়ে সে যেন তোমারি মত স্বার্থত্যাগ করতে পারে। ( আঁচলে মুখ মুছিয়া ) এ আমার চোখে দেখে যাবার সময় হবে না, কিন্তু আমার নিশ্চয় বিশ্বাস, যতীনের দেহে তার পূৰ্ব্বপুরুষদের রক্ত আছে। ত্যাগের যে শক্তি র্তাদের অস্থিমজ্জায় মিশে ছিল—শেখালে হয়ত সেও একদিন তোমারি মত মাথা উচু কোরে দাড়াবে। [ রমেশ চুপ করিয়া রহিল ] রমা। চুপ কোরে থাকলে ত আজ তোমাকে ছাড়ব না রমেশদ । রমেশ । দেখ, এ-সকলের মধ্যে আর আমাকে টেনে না । আমি অনেক দুঃখের পর একটুখানি আলোর শিখা জালাতে পেরেচি, তাই কেবলই ভয় হয়, পাছে একটুতেই তা নিবে যায়। রমা। তোমার ভয় নেই রমেশদ, এ আলো আর নিববে না। জ্যাঠাইমা বলছিলেন, তুমি দূর থেকে এসে বড় উচুতে বসে কাজ করতে চেয়েছিল বলেই এত বাধা পেয়েচ। তখন পরের মত তুমি গ্রাম্য-সমাজের অতীত ছিলে, এখন হয়েচ তাদেরই একজন। তখন তোমার দেওয়া ছিল বিদেশীর দান, আজ হয়েচে তা জাস্ট্রন্থের গ্রেহের উপহার। দুঃখ পেয়ে দুঃখ সয়ে সে তুমি আর নেই। তাই এ আলো আর মান হবে না,—এখন প্রতিদিনই উজ্জল হয়ে উঠবে। রমেশ। ঠিক জান য়ুমা, আমার এই দীপের শিখাটুকু আর নিববে না ? রমা। ঠিক জানি। ধিনি সব জানেন, এ সেই জ্যাঠাইমার কথা। এ-কাজ তোমারি। আমার যতীনকে তুমি হাতে তুলে নিয়ে, আমার সকল অপরাধ ক্ষম কোরে জাজ আশীৰ্ব্বাদ কর ষেন নিশ্চিম্ভ হয়ে আমি যেতে পারি। ३१३