পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামের মুমতি না রায়ণী নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, ব্যাস । ক লোক, ওকে তার নাম বলে দাও । কিন্তু মাস-কয়েক পরেই সত্যিই নারায়ণীর অসহ হইয়া উঠিল! তাহার বিধবা মা দিগম্বরী দশ বছরের কন্যা স্বরধুনীকে লইয়া এতদিন কোনমতে র্তাহার ভাইয়ের বাড়িতে দিন কাটাইতেছিলেন। হঠাৎ সেই ভাইয়ের মৃত্যু হওয়ায় তাহার আর দাড়াইবার স্থান রহিল না । নারায়ণী স্বামীকে সম্মত করাইয়া তাহাদিগকে আনাইতে লোক পাঠাইয়া দিলেন। র্তাহারা আসিলেন এবং আসিয়াই দিগম্বরী মেয়েকে ত ডিঙাইয়া গেলেনই, সেই সুবাদে রামকেও ডিঙাইবার জন্য পা বাড়াইতে লাগিলেন। প্রথম হইতেই তিনি রামকে বিদ্বেষের চোখে দেখিতে লাগিলেন । আজ সকালবেলা রাম দুই-তিন হাত লম্বা একটা অশখ চারা আনিয়া উঠানের মাঝখানে পুতিতে আরম্ভ করিয়া দিল। রান্নাঘরের দাওয়ায় বসিয়া দিগম্বরী মালা খুরাইতে যুৱাইতে সমস্ত লক্ষ্য করিয়া তীক্ষুস্বরে বলিলেন, ওটা কি হচ্ছে রাম ? রাম তাহার দিকে চাহিয়া বলিল, অশ্বখ গাছটা বড় হলে বেশ ছায়া হবে গো ! মাস্টারমশাই বলেচেন অশ্বথের ছায়া খুব ভাল। গোবিন্দ, যা, ঘটি করে জল নিয়ে অায় । ভোলা, মোটা দেখে বঁাশ কেটে আন—বেড়া দিতে হবে। নইলে গরু-বাছুরে থেয়ে ফেলবে । দিগম্বরী হাড়ে হাড়ে জলিয়া গিয়া বলিলেন, উঠানের মাঝখানে অশ্বখ গাছ ! এমন ছিঃিছাড়া কাজ কখনও বাপের বয়সে দেখিনি বাবা! রাম সে কথায় কর্ণপাতও করিল না ! - গোবিন্দ তাহার সামর্থ্যাকুযায়ী একটি ছোট ঘটি করিয়া জল আনিয়া উপস্থিত করিয়াছিল। রাম তাহার হাত হইতে ঘটিটি লইয়া সম্বেহে হাসিয়া বলিল, এটুকু জলে কি হবে রে পাগলা । তুই বরং দাড়া এইখানে, আমি জল আনিগে । তাহার পর ঘড়া ঘড়া জল ঢালিয়া সমস্ত উঠানটা কাদা করিয়া, রাম যখন গাছপোতা শেষ করিয়াছে, তখন নারায়ণী নদী হইতে স্নান করিয়া ফিরিয়া আসিলেন। দিগম্বী এতক্ষণ তুষের আগুনে দগ্ধ হইতেছিলেন, কারণ র্তাহার চোখের স্বমুখেই এই হিতকর বিরাট অনুষ্ঠানটি আরম্ভ হইয়া প্রায় সমাধা হইয়া উঠিয়াছিল। তিনি মেয়েকে দেখিতে পাইয়া চীৎকার করিয়া উঠিলেন, দেখং নারাণি, চেয়ে দেখ । তোর দেওরের কাগুটা একবার দেখং উঠানের মাঝখানে অশ্বখ গাছ পুতে বলে কিনা ছায়া হবে। আবার ওদিকে দেখ হারমজাদা ভোলার কাও। একটা আস্ত বঁাশঝাড় কেটে নিয়ে ঢুকচে–বেড়া দেওয়া হবে। নারায়ণ চাহিয়া দেখিলেন, সত্যই একরাশ বঁাশ ও কঞ্চি টানিয়া ভোগ উঠানে ३tr१