পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামের সুমতি উঠিলেন, নেত্য কাজ ফেলিয়া ছুটিয়া আসিল, রাম গাছ হইতে লাফাইয়া পড়িয়া উদ্ধশ্বাসে দৌড় মারিল। দুপুরবেলা হামলাল স্নানাহার করিতে আসিয়া দেখিলেন বিষম কাণ্ড। নারায়ণী নিজীবের মত বিছানায় পড়িয়া আছেন, তাহার ডান চোখ ফুলিয়া ঢাকিয়া গিয়াছে । তাহার উপর ভিজা স্যাকড়ার পটি বাধিয়া নেত্য পাথা লইয়া বাতাস করিতেছে । দিগম্বরী আজ আর আড়ালে গেলেন না, সামনেই চীংকার করিয়া কাদিয়া বলিলেন, রাম মেরে ফেলচে নারায়ণীকে । শু্যামলাল চমকাইয়া উঠিলেন । কাছে আসিয়া আঘাত পরীক্ষা করিয়া দেখিয়া কঠিনভাবে স্ত্রীকে বলিলেন, আজ তোমাকে আমি দিব্যি দিচ্ছি—যদি ওকে খেতে দাও, যদি কোনদিন কথা কও—যদি কোন কথায় থাক, সেই দিনে যেন তুমি আমার মাথা খাও । নারায়ণী শিহরিয়া উঠিয়া বলিলেন, চুপ কর, চুপ কর—ও কথা মুখে এনে না। শু্যামলাল বলিলেন, আমার এত বড় দিব্যি যদি না মানো, সেই দিন যেন তোমাকে আমার মরা মুখ দেখতে হয় । বলিয়া ডাক্তার ডাকিয়া আনিতে নিজেই চলিয়া গেলেন । , সমস্ত দিন নদীর ধারে ধারে বেড়াইয়া, বসিয়া, দাড়াইয়া, অসম্ভব কল্পনা করিয়া রাম সন্ধ্যার অন্ধকারে লুকাইয়া বাড়ি ঢুকিল দেখিল উঠানের মাঝামাঝি ছ্যাচ ধ"াশের বেড়া দিয়া বাড়িটিকে দুই ভাগ করা হয়েছে। নাড়া দিয়ে দেখল, বেশ । শক্ত, ভাঙা যায় না। রান্না-ঘরে আলো জলিতেছিল, চুপি-চুপি মুখ বাড়াইয়া দেখিল সেখানেও ওই ব্যবস্থা করা হইয়াছে। ঘরে কেহ নাই, শুধু একরাশ পিতল-ক'সার বাসন মেজের উপর পড়িয়া আছে। ব্যাপারটা যে কি, তাহা ঠিক না বুঝিতে পারিলেও, সকালবেলার কাগুটার সহিত কেমন করিয়া যেন যোগ রহিয়াছে, তাহা অনুমান করিয়া তাহার বুক শুকাইয়া উঠিল । তখন ফিরিয়া গিয়া সে চুপ করিয়া তাহার নিজের ঘরের মধ্যে বসিয়া বাটীর অপর খণ্ডের গতিবিধি শব-সাড়া শুনিতে লাগিল। ইতিপূৰ্ব্বে তাহার যে অত্যন্ত ক্ষুধা বোধ হইয়াছিল, এখন সে কথাও ভুলিয়া গেল। রাত্রি তখন বোধ হয় নয়ট, সে ঘুরিয়া গিয়া খিড়কীর দরজায় ঘা দিতেই নেত্য কপাট খুলিয়া দিয়া সরিয়া দাড়াইল । রাম জিজ্ঞাসা করিল, বৌদি কোথায় নেত্য ? - ঘরে শুয়ে আছেন । রাম ঘরে ঢুকিয়া দেখিল, বৌদি খাটের উপর শুইয়া আছেন, এবং নীচে মাঙ্গুর পাতিয়া দিগম্বরী ছোট মেয়েকে লইয়া বসিয়া আছেন। গোবিন্দ খেলা করিতেছিল, ছুটিয়া আসিয়া কাকার হাত ধরিয়া ঝুলিতে ঝুলিতে বলিয়া দিল, কাক, তোমার 臀兽建 | - -