পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ঘলিয়া ফেলিয়াও যখন হইল না, তখন সে চুপ করিয়া কাদিতে লাগিল। কি উপারে কি দিয়া কেমন করিয়া সে বৌদিদিকে প্রপন্ন করবে ? বৌদিদি তাহাকে আগান। করিয়া দিয়াছে, তবে কোথায় সে যাইবে ? কাহার কাছে কেমন করিয়া সে থাকিবে ? কোন দিকেই আজ সে কুল-কিনারা দেখিতে পাইল মা। আজ সে র"াধিবার চেষ্টাও করিল না, পড়িতেও গেল না, ঘরে গিয়া শুইয়া রহিল । গোপনে ক'দিয়া কাদিয়াই বোধ করি, গত রাত্রে নারায়ণীর জর আসিয়াছিল। দুপুরবেলা দিগম্বরী এক বাটি দুধ আনিয়া বলিলেন, খেতেই হবে । না খেয়ে কি মরবি ? নারায়ণী প্রতিবাদ না করিয়া দুধের বাট হাতে লইয়া কতকটা খাইয়া বাটী নামাইয়। রাখিয়া পাশ ফিবিয়া শুইলেন। তঁহার নি। না করিয়া কথাকাটাকাটি করিতে ঘুণ বোধ হইল । রাত্রি যখন নয়টা বাজিয়া গিয়াছে, তখন নেতা আসিয়া চুপি চুপি বলিল, মা, ছোটবাবুর ত কোন সাড়া-শব্দ পাইনে—রাত ত ঢের হ’ল ! নারায়ণী উদ্বেগে উঠিয়া বসিয়া কাদিয়া ফেলিলেন, লক্ষ্মী মা অামার, দেখে আয় সে ঘরে আছে কি না । নেত্যর চোখ ভিজিয়া উঠিল । হাত দিয়া চোখ মুছিয়া ফেলিয়া বলিল, আমার যেতে সাহল হয় না মা ! বলিয়া বাহিরে গিয়া ভালীকে ডাকিয়া আনিল । ভোলা ংবাদ দিল—দাঠাকুর ঘরে আছে, ঘুমুচ্চে । নারায়ণী নিঃশব্দে দুই হাত জোড় করিয়া কপালে ঠেকাইয়া চার মুড়ি-দিয়া আবার শুইয়া পড়িলেন। পরদিন প্রভাত না হইতেই তিনি স্নান করিয়া আসিয়া রান্না চড়াইয়া দিলেন । রায় যখন প্রায় অৰ্দ্ধেক অগ্রসর হইয়াছে, তখন দিগম্বরী গাত্ৰোখান করিয়া ব্যাপার দেখিয়া আশ্চৰ্য্য হইয়া গেলেন। কর্কশ-স্বরে প্রশ্ন করিলেন, তোর না জর নারানি ? তুই না তিন দিন খাস্নি ? ভোর-বেল উঠে চান করে এসে এ-সব কি হচ্ছে, জিজ্ঞেস করি । নারায়ণী স্বাভাবিক মৃদুকণ্ঠে বলিলেন, রাধচি, দেখতে ত পাচ্চ । তা ত পাচ্চি, কিন্তু কেন ? শুনি ? তুই কি আমার হাতে খাবিনি ? নারায়ণী জবাব দিলেন না, কাজ করিতে লাগিলেন । কাল সমস্ত দিন ধরিয়া রাম এই কথা ভাবিতেছিল—বৌদিদির না-জানি কত লাগিয়াছে ! একটা ক’চি পেয়ার লইয়া বার বার কপালের উপর ঠুকিয়া গে জাঘাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করিবার চেষ্টা করিয়া, শেষে ভাবিতে বসিয়াছিল, কি করিলে এই কুকৰ্ম্মট মুছিয়া ফেলিতে পারা যায়। ভাবিতে ভাবিতে তাহার মনে পড়িয়া গেল, কিছুদিন পূর্বে বৌদিদি তাহাকে এইস্থানে থাকিতে নিষেধ করিয়াr శ్రీ