পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামের মুমতি ছিলেন। শেষে স্থির করিল, সে আর কোথাও গেলে বৌদিদি খুশী হইবে। তাহার মামার বাড়ি তারকেশ্বরের ওদিকে, অথচ কোথায় সে ঠিক জানে না । সেইখানে গিরা খুজিয়া লইবে, সঙ্কল্প করিয়া সে একটি ছোট পুটুলি বাধিয়া লইয়া প্রভাতের প্রত্যাশায় অপেক্ষা করিয়া বসিয়া রহিল। নারায়ণী রান্না শেষ করিয়া একখানি থালায় সমস্ত দ্রব্য পরিপাটি করিয়া সাজাইতেছিলেন। দ্বারের কাছে ভোলা আসিয়া ডাকিল, মা ! নারায়ণী ফিরিয়া ভোলাকে দেখিয়া বলিলেন, কি রে ভোলা ? এ কয়টা দিন সে বাহিরে গরুর সেবা করিত বটে, কিন্তু রামের ভয়ে ভিতরে আলিত না। ভোলা আস্তে আস্তে বলিল, চুপি চুপি একটা কথা আছে যা । নারায়ণী কাছে আসিতেই ভোলা ফি ফিস্ করিয়া বলিল, তুমি যা বলেছিলে মা, তাই হয়, যদি দুটি টাকা দাও । নারায়ণী বুঝিতে না পারিয়া বলিলেন, কি হয় রে ? কাকে টাকা দিতে হবে ? ভোলা একটুখানি আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, তুমি দাঠাকুরকে চলে যেতে বলেছিলে না ? তিনি যেতে রাজি আছেন—আচ্ছা, দুটো না দাও, একটি টাকা দাও। নারায়ণী ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন, কোথায় যেতে রাজি আছে রে ? কোথায় সে ? ভোলা বলিল, বাইরে গাছতলায় দাড়িয়ে আছেন । বাবার থানের ওদিকে কোথায় তেনার মামার বাড়ি আছে যে ! যা ভোলা, শীগগির ডেকে আন—বল, আমি ডাকচি। ভোলা ছুটয় গেল, নারায়ণী কাঠ হইয় দাড়াইয়া রহিলেন। অনতিকাল পরেই রাম একটি ছোট পুটুলি হাতে লইয়। কাছে আসিয়া দাড়াইতেই নারায়ণী নিঃশকে তাহার হাত ধরিয়া ঘরের মধ্যে টানিয়া লইয়া গেলেন । দূর হইতে দিগম্বরী রামকে রান্নাঘরে ঢুকিতে দেখিয়া আশঙ্কায় পরিপূর্ণ হইয়া কতপদে ঘরে ঢুকিয়া দেখিলেন, সাজানো থালা স্বমুখে নারায়ণীর কোলের উপর বসিয়া রাম তাহার বুকের মধ্যে মুখ লুকাইয়া আছে, এবং তাহার মাথার উপর, পিঠের উপর, আর এক জনের অশ্র বৃষ্টি-ধারার মত ঝরিয়া পড়িতেছে। অবাক হইয়া কিছুক্ষণ চাহিয়া থাকিয়া তিনি বলিলেন, ও—তাই এত রান্না ? খাওয়ান হবে বুঝি ? আমার জামাই যে এত বড় দিব্যিটা দিলেন, সেটা ভেসে গেল বুঝি ? নারায়ণী মুখ তুলিয়া বলিলেন, ভেসে যাবে কেন মা, তার কথা আমি অমান্ত করিনি, তিন দিন খাইনি, খেতেও দিইনি। দিগম্বরী তীক্ষভাবে বলিলেন, এই বুঝি অমান্ত করিস্নি, তবে এ কি হচ্চে যে ীিবি ীিয়েটে তার বুঝি হমেটাৎ একবার নিতে হবে না ? Yడి}}