পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলো ও ছায়া —তোমার বর বুঝি তার খুব অনুগত ? —হঁ্যা, তিনি সতীলক্ষ্মী, সবাই তাকে ভালবাসে W উপরের জানালা হইতে স্বরম। দেগিল, যজ্ঞদত্ত বাড়ি ফিরিয়া আসিল, কিন্তু সঙ্গে বোঁ নাই। ঘরে প্রবেশ করিলে কহিল, যজ্ঞদাদা, বোঁকে কোথায় রেখে এলে ? পিসির বাডি । সঙ্গে আনলে না কেন ? থাক কিছুদিন, পরে আনলেই হবে। কথাটা স্বরমার বুকে বিধিল । দুইজনেই চুপ করিয়া রহিল। প্রিয়জনের সহিত তর্ক করিতে গিয়া হঠাৎ বচসা হইয়া গেলে যেমন দুইজনেই কিছুক্ষণ ক্ষুণ্ণমনে চুপ করিয়া বসিয়া থাকে, এ দুইজনও কিছুদিন তেমনি চুপ-চাপ দিন কাটাইতে লাগিল । সুরমা কহে, নেয়ে-খেয়ে নাও, অনেক বেলা হল । যজ্ঞদত্ত বলে, হা এই যাই। এমনি করিয়াও কিছুদিন কাটিল। একসঙ্গে ঘর করিতে গিয়া চিরদিন এভাবে চলে না, তাই আবার মিল হইতে লাগিল। যজ্ঞদত্ত আবার আদর করিয়া ডাকিতে লাগিলেন-ও ছায়া দেবী । ছায়া কিন্তু আর আলোমশায় বলে না, যজ্ঞদাদা বলে, কখনও বা শুধু দাদা বলিয়াই ডাকে। সুরমা একদিন কহিল, দাদা, প্রায় তিনমাস হতে চলল, এইবার বৌকে আনে। ষঙ্গদত্ত কাটাইয়া দেয়, ই তা হবে এখন । মনের ভাব বুঝিয়া মুরমা চুপ করিয়া থাকে। পিসির পত্র মাঝে মাঝে আসে। পিসি লেখেন, বৌয়ের ম্যালেরিয়া জর হইতেছে, চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন। মনের ভাব বুঝিয়া যজ্ঞদত্ত কতকগুলো টাকা বেশি করিয়া পাঠাইয়া দেয়। আর মাস-থানেক কোন কথা উঠে না। এমন সময় একদিন হঠাৎ চিঠি আসিল যে, পিসি মরিয়া গিয়াছে। যজ্ঞদত্ত বৰ্দ্ধমানে চলিয়া গেল। যাইবার সময় স্বরম মাথার দিব্যি দিয়া বলিয়া দিল, বোঁকে নিয়ে এস । ५ বর্ধমানে পিসির শ্রাদ্ধশাস্তি হইয়া গেলে একদিন দুপুরবেলা যজ্ঞয়ত্ত বায়াদায় দাড়াইয়া বাড়ি যাইবার কথা ভাবিতেছিল । উঠানে একটা ধানের মরাইয়ের পাশে