পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুসলিম সাহিত্য-সমাজ চাই, কেন তাদের পথ দীর্ঘ হবে ? কিসের জন্ত সাধনা তাদের মুকঠিন হয়ে উঠবে ? কেন একটি সহজ সুন্দর পথে এই সমস্তার সমাধান আমরা খুজে পাব না ? ওয়াজেদ আলী সাহেব পরে বলেছেন, "যাদের মনে রইলো প্রবল বিরুদ্ধতা, অন্তরে রইলো গভীর অপ্রেম, চিত্তে রইলো দীর্ঘ ব্যবধান, তাদেরকে টেনে পাশাপাশি দাড় করানো হ’ল । তাতে শিষ্টাচারের তাগিদে হাতের সাথে হাত মিললো, তাদের দৃষ্টি-বিনিময় হল না ; একজনের অন্তর রইলো আর একজনের অন্তর থেকে শত যোজন দূরে।” এর হেতু দেখাতে গিয়ে বলেছেন, “অচেনা মুসলিম এলো বিজয়ীর বেশে, অধিকার করলে রাজার আসন। আমুগত্য, রাজসম্মান সে পায়নি এমন নয় ; কিন্তু ভারতবর্ষকে স্বদেশ স্বীকার করেও দেশমনের মিতালি তার ভাগ্যে হয়নি, এদের অপরিচয়ের ষে ব্যবধান সেটি অবাঞ্ছিত হলেও কোনদিন ঘোচেনি।” কিন্তু এই কি সমস্ত সত্য ? সত্য হলে এই অবাঞ্ছিত ব্যবধান ঘুচিয়ে মিতালী করতে ক’টা দিন লাগে ? মনে হয় লীলাময় অনেক ব্যথার মধ্যে দিয়েই লিখেছেন, “যারা বিদেশ থেকে এসেছেন ও আজও তা মনে রেখেছেন, ধারা জলের উপর তেলের মত থাকবেন বলে স্থির করেছেন আবহমান কাল, দেশের অতীত সম্বন্ধে র্যাদের অমুসন্ধিৎসা ও বর্তমান সম্বন্ধে ধাদের বেদনা-বোধ নেই, রাষ্ট্রের ভিতরে আর একটা রাষ্ট্র-রচনাই র্যাদের স্বপ্ন ; আমরা তাদের কে, যে গায়ে পড়ে তাদের অপ্রিয় সত্য শোনাতে যাবো” ? oএ-কথার এ অর্থ নয় যে, ব্যবধান আমরা ভালবাসি, মিতালী চাইনে, পরস্পরের আলোচনা-সমালোচনা পরিহার করাই আমাদের বিধেয় । এ উক্তির তাৎপর্য্য যে কি, সমস্ত সাহিত্য-রসিক বিদগ্ধ মুসলিম সমাজকেই আমি দিতে বলি। কলহবিবাদ, তর্ক-বিতর্ক, বাদ-বিতগু করে নয় । কোথার ভ্রম, কোথায় অস্কায়, কোনখানে অবিচার লুকিয়ে আছে, সেই অকল্যাণকে সুস্থ সবল চিত্ত দিয়ে আবিষ্কার করে দিতে বলি, এবং বলি উভয় পক্ষকেই সবিনয়ে সশ্রদ্ধায় তাকে স্বীকার করে নিতে। তখন পরস্পরের স্নেহ, প্রেম, ক্ষম আমরা পাবোই পাবো । 獻 ওয়াজেদ আলী সাহেব একটি চমৎকার ভরসার কথা বলেছেন, সেটি হিন্দুমুসলমান সকলেরই মনে রাখা উচিত। বলেছেন, “মুসলিম সাহিত্য-সেবক আরবীফারসী শব্দ বাংলা ভাষার অঙ্গে জুড়তে চাইছেন, এতে আপত্তি অতি তুচ্ছ কথা, কেন-ন শুধু কলম চালিয়ে ওটি হতে পারে না ; তার জন্তে চাই প্রচুর সাহিত্যিক শক্তি, চাই স্থষ্টিশীল প্রতিভা। এ দুটি যেখানে নেই সেখানে ভাষা-ভূষণ পরতে গিয়ে অতি সহজেই সং সাজতে পারে ।” r 響登臺