পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰন্থ পারেই ত। কিন্তু এ জ্ঞান আছে কার ? যিনি যথার্থ সাহিত্য-রসিক, তার। ভাষাকে যিনি ভালবাসেন, অকপটে সাহিত্যের সেবা করেন, তার । তাকে ত আমার ভয় নেই। আমার ভয় শুধু তাদের র্যাদের সাহিত্য-সেবা না করেও সাহিত্যের মুরব্বি হয়ে বসেছেন। প্রিয় না হলেও একটা দৃষ্টান্ত দিই। মহেশ’ নামে আমার লেখা একটা ছোট গল্প আছে, সেটি সাহিত্যপ্রিয় বহু লোকেরই প্রশংসা পেয়েছিল। একদিন শুনতে পেলাম গল্পটি Matric-এর পাঠ্য-পুস্তকে স্থান পেয়েছে ; আবার একদিন কানে এলো সেটি না কি স্থানভ্রষ্ট হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিজের কোন যোগ নেই, ভাবলাম এমনিই হয়ত নিয়ম। কিছুদিন থাকে, আবার যায়। কিন্তু বহুদিন পরে এক সাহিত্যিক বন্ধুর মুখে কথায় কথায় তার আসল কারণ শুনতে পেলাম। আমার গল্পটিতে না-কি গো-হত্যা আছে। অহো ! হিন্দু বালকের বুকে যে শূল বিদ্ধ হবে । বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বহু টাকা মাইনের কৰ্ত্তা-মশায় এ অনাচার সইবেন কি করে ? তাই মহেশের স্থানে শুভাগমন করেছেন তার স্বরচিত গল্প 'প্রেমের ঠাকুর’ । আমার ‘মহেশ’ গল্পটা হয়ত কেউ কেউ পড়ে থাকবেন, আবার অনেকেই হয়ত পড়েননি। তাই শুধু বিষয়-বস্তুটা সংক্ষেপে বলি। একটি হিন্দুপ্রধান জমিদার-শাসিত ক্ষুদ্র গ্রামে গরীব চাষা গফুরের বাড়ি। বেচারীর থাকার মধ্যে বহুজীর্ণ বহুছিদ্রযুক্ত একখানি খড়ের ঘর, বছর-দশেকের মেয়ে আমিন, আর একটি ষাড় । গফুর ভালবেসে তার নাম দিয়েছিল মহেশ । বাকী খাজনার দায়ে ছোট গায়ের ততোধিকছোট জমিদার যখন তার ক্ষেতের ধান-খড় আটক করলে, তখন সে কেঁদে বললে হজুৰ! আমার ধান তুমি নাও, বাপ-বটিতে ভিক্ষে করে খাবে, কিন্তু খড় ক’টি দাও,-নইলে এ-দুদিনে মহেশকে আমার বাচাবো কি করে ? কিন্তু রোদন তার অরণ্যে রোদন হ’ল—কেউ দয়া করলে না । তার পরে শুরু হ’ল তার কত রকমের দুঃখ, কত রকমের উৎপীড়ন । মেয়ে জলের জন্তে বাইরে গেলে সেই জীর্ণ কুটীরের খড় ছিড়ে নিয়ে লুকিয়ে মহেশকে খাওয়াতে, মিছে করে বলতো, মা আমিন, আজ আমার জর হয়েছে, আমার ভাত ক’টি তুই মহেশকে দে। সারাদিন নিজে অভূক্ত থাকতো। ক্ষুধার জালায় মহেশ অত্যাচার করলে এই দশ বছরের মেয়েটার কাছেও তার ভয় ও কুষ্ঠার অবধি থাকতো না। লোকে বলতো গরুটাকে তুই খাওয়াতে পারিসনে গফুর, ওকে বেচে দে। গফুর চোখের জল ফেলে আস্তে আস্তে তার পিঠে হাত বুলিয়ে বলতে, মহেশ তুই আমার ব্যাট,—আমাকে তুই সাত বন প্রতিপালন করেছিল। খেতে না পেয়ে তুই কত রোগ হয়ে গেছিল,—তোকে ৰুি আজ আমি পরের হাতে দিতে পারি বাবা! এমনি করে দিন যখন জার কাটতে চায় না তখন একদিন অকস্মাং এক বিষম কাও ঘটলো । সে গ্রামে জলও g鬱喙