পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ দাসী হাসিয়া বলিল, না, তিনি গঙ্গাস্নান, পূজো-আহ্নিক সেরে কাছারি-ঘরে গেছেন। খবর পাঠাব কি ? বন্দন বলিল, না, তার দরকার নেই। স্বানের ঘরট একটু দূরে, ছোট একটা বারান্দ পার হইয়া যাইতে হয়। বন্দন যাইতে যাইতে কহিল, তোমাদের এখানে বাথরুম শোবার ঘরের কাছে থাকবার জে নেষ্ট, না ? দাসী কহিল, না । মা মাঝে মাঝে কালী-দর্শনের জন্যে কলকাতায় এলে এবাড়িতেই থাকেন কি না, তাই ও-সব হবার জো নেই। বন্দনা মনে মনে বলিল, এখানেও সেই প্রবল-প্রতাপ মা । আচার-অনাচারের কঠিন শাসন। সে ফিরিয়া গিয়া কাপড় জামা গামছা প্রভৃতি লইয়া আসিল, কহিল, এখানে দু-চারদিন যদি থাকতে হয়, তোমাকে কি বলে ডাকব ? এখানে তুমি ছাড়া আর বোধ হয় কোন দাসী নেই ? সে বলিল, আছে, কিন্তু তার অনেক কাজ । ওপরে আসবার সময় পায় না। যা দরকার হয় আমাকেই আদেশ করবেন দিদি, আমার নাম অন্নদা । কিন্তু পাড়াগায়ের লোক, হয়ত অনেক দোষ-ত্রুটি হবে । তাহার বিনয়বাক্যে বন্দন মনে মনে খুশী হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, কোথায় তোমার বাড়ি অন্নদা ? তোমার কে কে আছে ? অন্নদা বলিল, বাড়ি আমাদের এদের গ্রামেই—বলরামপুরে। একটি ছেলে, তাকে এরাই লেখা-পড়া শিখিয়ে কাজ দিয়েছেন, বোঁ নিয়ে সে দেশেই থাকে। ভালই আছে দিদি । বন্দন কৌতুহলী হইয়া প্রশ্ন করিল, তবে নিজে তুমি এখনো চাকুরি ক'র কেন, বৌব্যাটা নিয়ে বাড়িতে থাকলেই ত পার ? অন্নদা কহিল, ইচ্ছে ত হয় দিদি, কিন্তু পেরে উঠিনে। দুঃখের দিনে বাবুদের কথা দিয়েছিলুম নিজের ছেলে যদি মানুষ হয়, পরের ছেলেদের মানুষ করার ভার নেব। সেই ভারটা ঘাড় থেকে নামাতে পারিনি। দেশের অনেকগুলি ছেলে এই বিদেশে লেখা-পড়া করে । আমি না দেখলে তাদের দেখবার কেউ নেই। তারা বুঝি এই বাড়িতে থাকে ? ই, এই বাড়িতে থেকেই কলেজে পড়ে। কিন্তু আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমি বাইরেই আছি, ডাকলেই সাড়া পাবেন। বন্দনা বাথরুমে ঢুকিয়া দেখিল ভিতরে নানাবিধ ব্যবস্থা ! পাশাপাশি গোটাতিনেক ঘর, স্পর্শ দোষ বাচানোর যত প্রকার ফন্দি-ফিকির বুদ্ধিতে আসিতে পারে তাহার কোন ক্রটি ঘটে নাই। বুঝিল এসব মায়ের ব্যবহারের জন্ত। পাথরের মেঝে, שלא