পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস সারাদিন না খেয়ে কাটল আপনার । ফল-মূল সমস্ত আনিয়ে রেখেছি, একটু শীগগির করে মুখ-হাত ধুয়ে নিন, আমি ততক্ষণ সব তৈরি করে ফেলি। কি বলেন ? কিন্তু বড়বাবু—মুখুয্যেমশাই ? তিনি কই ? অন্নদা কহিল, তার জন্য ব্যস্ত হবার দরকার নেই দিদি ; এ-সব তার রোজকার ব্যাপার। খাওয়ার চেয়ে না-খাওয়াটাই তার নিয়ম । কিন্তু কই তিনি ? তিনি গেছেন দক্ষিণেশ্বরে কালীদর্শন করতে। এখুনি আসবেন। বন্দনা কহিল, সেই ভাল, তিনি এলেই হবে । কিন্তু বাকী সকলে ? তাদের কি ব্যবস্থা হ’লে ? চল ত অন্নদা, তোমাদের রান্নাঘরটা দেখে আসি । অন্নদা কহিল, চলুন, কিন্তু এ-বেলায় তাদের ব্যবস্থা ত রান্নাঘরে হয়নি দিদি, ব্যবস্থা হয়েচে হোটেলে—খাবার সেখান থেকেই আসবে । বন্দনা আশ্চৰ্য্য হইয়া গেল—সে কি কথা ? এ পরামর্শ তোমাদের দিলে কে ? বড়বাবু নিজেই হুকুম দিয়ে গেছেন। কিন্তু সে-সব অখাদ্য-কুখাদ্য র্তারা খাবেন কোথায় ? এই বাড়িতে ? তোমাদের মা শুনলে বলবেন কি ? অন্নদা অপ্রতিভ হইয়া উঠিল, কহিল, না, তিনি শুনতে পাবেন না। নীচের একটা ঘরে সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে । বাসন-পত্র হোটেলওয়ালারাই নিয়ে আসবে, কোন অসুবিধে হবে না । বন্দনা বলিল, হুকুম ত দিয়ে গেলেন, কিন্তু তামিল করলে কে ? তার কাছে আমাকে একবার নিয়ে যেত পার ? সে আর বেশি কথা কি দিদি, চলুন নিয়ে যাচ্চি। চল । মুখুয্যেদের একটা বড় রকমের তেজারতি কারবার কলকাতায় চলে। নীচের তলায় গোটা-চারেক ঘর লইয়া আফিস ; কেরানী, গোমস্তা, সরকার, পেয়াদা, ম্যানেজার প্রভৃতি ব্যবসায়ের যাবতীয় লোকজন কাজ করে, বন্দন প্রবেশ করিতেই সকলে উঠিয়া দাড়াইল । বয়স ও পদমর্য্যাদার লক্ষণে ম্যানেজার ব্যক্তিটিকেই সহজে চিনিতে পারিয়া সে ইঙ্গিতে র্তাহাকে বাহিরে ডাকিয়া আনিয়া কহিল, হোটেলে হুকুম দিয়ে এসেছিলেন কি আপনি নিজে ? ম্যানেজার ঘাড় নাড়িয়া স্বীকার করিলে কহিল, আর একবার যান তাদের বারণ করে দিয়ে আৰুন। ম্যানেজার বিম্মিত হইল, ইতস্তত: করিয়া কহিল, বড়বাৰু ফিরে না আসা পৰ্য্যন্ত-- - 8 > باس-صريين