পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস দ্বিজদাস বলিল, প্রথম, কৈলাস-যাত্রা সঙ্গন্ধে মামীদের সঙ্গে পরামর্শ করা, দ্বিতীয়,--আপনাকে বলরামপুরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। দেখবেন যেন ন ৰলে বসবেন না | বদন বুলিল, আচ্ছা তাই হবে। দ্বিজদাস কহিল, মীর সামনে আপনাকে মিস্ রায় বলা চলবে না। আপনি আমার বয়সে ছোট—বৌদিদির ছোট বোন—অতএব নাম ধরেই ডাকব । যেন রাগ করে আবার একটা কাও বাধাবেন না। বন্দন হাসিয়া বলিল, না, রাগ করব কেন? আপনি আমার নাম ধরেই ডাকবেন। কিন্তু আপনাকে ডাকবো কি বলে ? দ্বিজদাস বলিল, আমাকে দ্বিজুবাবু বলেই ডাকবেন । কিন্তু দাদাকে মুখুয্যেমশাই বলা মানাবে না । তাকে সবাই বলে বড়দাদাবাবু—আপনাকে ডাকতে হবে বড়দাদা বলে । এই হ’ল আপনার দ্বিতীয় পাঠ । কেন ? দ্বিজদাস বলিল, তর্ক করলে শেখা যায় না, মেনে নিতে হয়। পাঠ মুখস্থ হলে এর কারণ প্রকাশ করব, কিন্তু এখন নয় । বন্দনা কহিল, মুখুয্যেমশাই কিন্তু নিজে আশ্চৰ্য্য হবেন। দ্বিজদাস বলিল, হলেও ক্ষতি নেই, কিন্তু মা, বৌদিদি এর বড় খুশী হবেন। এটা সত্যিই দরকার । আচ্ছা, তাই হবে । সিড়ির একধারে জুতা খুলিয়া রাখিয়া বন্দন! দয়াময়ীর ঘরে গিয়া উপস্থিত হইল। পিছনে গেল দ্বিজদাস ও বাসুদেব । তিনি তোরঙ্গ খুলিয়া কি একটা করিতেছিলেন এবং কাছে দাড়াইয়া অন্নদা বোধ করি গৃহস্থালীর বিবরণ দিতেছিল। দয়াময়ী মুখ তুলিয়া চাহিলেন, কিছুমাত্র ভূমিকা না করিয়া সহজ-কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার গা ধোয়া, কাপড় ছাড়া হয়েছে মা ? ই মা, হয়েচে । তা হলে একবার রান্নাঘরে যাও মা ! এতগুলি লোকের কি ব্যবস্থা বামুনঠাকুর করচে জানিনে—আমিও আহিকটা সেরে যাচ্ছি। বন্দন নীরবে চাহিয়া রহিল, তিনি সেদিকে দৃষ্টিপাতও করিলেন না, বলিলেন, দ্বিজুর শরীরটা ভালো নেই, সকালে ও কিছু খেয়ে আসেনি। ওর খাবারটা যেন একটু লীগগির হয় মা। এই বলিয়া তিনি অন্নদাকে সঙ্গে করিয়া পূজার ঘরের দিকে চলিয়া গেলেন, বঙ্গনার উত্তরের জন্ত অপেক্ষা করিলেন না। বদন জিজ্ঞাসা করিল, কি অস্কখ করল ? 载\3