পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস নিয়ে তবে ছাড়বে। ও জানতো সামনে এসে যার দেওয়া চলে না তাকে পরের হাত দিয়ে ঘুষ পাঠাতে হয়। কেন, খেয়েও কি বুঝতে পারিসন বিপিন, আমন রান্না পিসি তার বাপের জন্মেও র ধতে জানে না ? বিপ্রদাস সহস্তে উত্তর দিল, না মা, অত লক্ষ্য করিনি। শুধু মাঝে মাঝে সন্দেহ হতো তোমার অতিথিদের সে-রান্নাঘরের বিপুল আয়োজনের টুকরা-টাকরা হয়ত আমাদের এ-রান্নাঘরেও ছিটকে এসে পড়েচে । কিন্তু সে যে দৈবকৃত নয় একজনের ইচ্ছাকৃত এ খবর আনন্দের । কিন্তু তোমার শেষ আদেশ জানিয়ে দাও মা । ট্রেনের সময় হয়ে এলো, আমাকে এখনি ছুটতে হবে,—তার নিমন্ত্রণ তুমি রাখলে না প্রত্যাহার করলে তাই বলে । দয়াময়ী সতীকে উদেশ্ব করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি বলে বোমা ? ছেলেবেলায় সতী শাশুড়ীর সন্মুখে স্বামীর সহিত কথা কহিত, কিন্তু এখন আর বলে না। প্রায়ই পাশ কাটাইয়া চলিয়া যায়, নয় নিরুত্তরে থাকে । কিন্তু আজ কথা কহিল, আস্তে আস্তে বলিল, থাকগে মা, এখানে তার আর এসে কাজ নেই। জবাব শুনিয়া শাশুড়ী খুশী হইতে পারিলেন না। র্তাহার অভিলাষ ছিল অন্য প্রকার, অথচ নিজের মুখে প্রকাশ করাও চলে না । বলিলেন, বড় মানুষের মেয়ের অভিমান হলো বুঝি ? ন মা, অভিমান নয়, কিন্তু যা করে আমরা চলে এসেচি তার পরে আর তাকে এখানে ডাকা চলে না | কেন চলবে না বোম, একটা অন্যায় যদি হয়েই থাকে তার কি আর সংশোধন নেই ? নেই বলিনে, কিন্তু দরকার কি। আগেও অনেকবার সে আসতে চেয়েচে, কিন্তু কখনো আমরা রাজি হতে পারিনি, এখনো সমস্ত বাধা তেমনি আছে। সে ঢুকতে বলে উনি রান্নাঘরের সম্পর্ক ছেড়েছিলেন, কাজ কি তাকে এখানে এনে ? বিপ্রদাস কহিল, সে নালিশ তার, তোমার নয়। বলিয়াই হাসিয়া ফেলিল, কহিল, তবু বন্দন আমাকে প্রচণ্ড ভক্তি করে, স্বয়ং মা তার সাক্ষী । সতী মুখ তুলিয়া চাহিল, বোধ হয় হঠাৎ ভুলিয়া গেল, শাশুড়ী আছেন, বলিল, শুধু মা কেন আমিও তার সাক্ষী। মেয়েরা ভক্তি যখন করে তখন নালিশ আর করে না। দেব-দেবতাও কম পীড়ন করেন না, তৰু পূজো বন্ধ না করে বলে দুঃখ দিয়েচেন তিনি ভালোর জন্যই। শাশুড়ীকে বলিল, তোমাকেও বন্দনা কম ভক্তি করেনি মা, কম ভালোবাসেনি। তোমার ধারণা তোমার ঘরে সে খাবার আয়োজন করে দিত কেবল স্ট্রর জন্তে ? তা নয়, করত সে তোমাদের দু'জনের জন্যেই,-তোমাদের দু'জনকেই ভালোবালে। তার পরে দিয়েছিলে তুমি রান্নাঘরের তার-সকলকে খেতে দেবাৰ مناعي