পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रृंहगोह চরিত্রের এই দিকটা স্বদেশের জানা ছিল না বলিয়া সে এই আশ্চর্ঘ্য বর্মণীর মুখেই পানে তাকাইয়া সকৌতুক হাস্তে বলিল, না! না! তোমার সেজদার চেয়ে জামি প্রায় দেড় বছরের ছোট । মৃণাল কহিল, তা হলে নদী, দয়া করে একটি লোক ঠিক করে দিন, যে আমাকে কাল সকালের গাড়িতে রেখে আসবে। যাইবার অনুমতি এইমাত্র সুরেশ নিজে দিলেও সে যে কাল সকালেই যাইতে উদ্যত হইবে তাহা সে ভাবে নাই । তাই ক্ষণকাল স্থির থাকিয়া ঈষৎ গম্ভীর হইয়া বলিল, আর দুটো দিনও কি থাকতে পারবে না দিদি ? তোমার ওপর ভার দিয়ে আমরা মহিমের জন্তে একেবারে নিশ্চিন্ত ছিলুম। এমন অহৰ্নিশি সতর্ক, এমন গুছিয়ে সেবা করতে আমি হাসপাতালেও কখনো কাউকে দেখেচি বলে মনে হয় না। কি বল অচলা ? প্রত্যুত্তরে অচলা শুধু মাথা নাড়িল । মৃণাল স্বরেশের চিন্তিতভাব লক্ষ্য করিয়া হাসিমুখে বলিল, আপনি সেজন্যে একটুকুও ভাববেন না। যার জিনিস, তারই হাতে দিয়ে যাচ্ছি, নইলে আমিও হয়ত যেতে পারতুম না। আপনার ত মনে আছে, আমাকে কি-রকম তাড়াতাড়ি চলে আসতে হয়েছিল। তাই কোনো বন্দোবস্ত করেই আসা হয়নি। কাল আমাকে ছুটি দিন নদী আবার যখনই হুকুম করবেন তখনই চলে আসব। স্বরেশ আবার কিছুক্ষণ মৌন থাকিয়া সহসা বলিয়া বসিল, আচ্ছা মৃণাল, সেই অজ পাড়াগায়ে শুধু কেবল এক বুড়ে। শাশুড়ীর সেবা করে, আর পূজো-আহ্নিক করে তোমার সমস্ত সময়টা কাটবে কি করে, আমি তাই শুধু ভাবি । মৃণালের মুখের উপর পুনরায় ব্যথায় চিহ্ন প্রকাশ পাইল। কিন্তু সে হাসিয়া কহিল, সময় কাটাবার ভার ত আমার ওপর নেই নদী । যিনি সময় স্বাক্ট করেছেন তিনিই তার ব্যবস্থা করবেন । স্বরেশ কহিল, আচ্ছা, সে যেন হ’লো। কিন্তু তোমার শাশুড়ী ত বেশিদিন বাঁচবেন না, আর মহিমকেও ডাক্তারের হুকুমমত ভাল হয়ে পশ্চিমের কোন একটা স্বাস্থ্যকর শহরে গিয়ে কিছুকাল বাস করতে হবে। তখন একলাটি সেখানে তুমি থাকবে কি করে ? মৃণাল উপরের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া পুনরায় একটু হাসিল। কহিল, সে উনিই জানেন । অজ্ঞাতসারে স্বরেশের মুখ দিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস পড়িল। মৃণাল কহিল, নদী বুঝি এ সব মানেন না ? কি লব ? BSE